ভারতকে ঘিরে কেন হুমকির মুখে দক্ষিণ এশিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক: দক্ষিণ এশিয়া, ভারতকে কেন্দ্র করে বর্তমানে ভয়াবহ ভূরাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে পড়ছে। প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সম্পর্কের জটিলতা এই অঞ্চলে উত্তেজনা ও অস্থিরতা বৃদ্ধি করছে। এই পরিস্থিতি সামনে আরও কি নতুন ধরনের হুমকি আনতে পারে? বিশদে জানাচ্ছেন আরিফ হাসান।
দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এবং ভূরাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি অঞ্চল। ভারতের সামরিক, অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত অবস্থান এই অঞ্চলটিকে আন্তর্জাতিক পরাশক্তির আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু করে তুলেছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক ইস্যুর কারণে ভারতকে ঘিরে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং অস্থিরতা বাড়ছে।
সম্প্রতি কাশ্মীরের পেহেলগামে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হওয়ার ঘটনায় ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ভারত পাকিস্তানকে সরাসরি দায়ী করে, ইসলাবাদ বিরোধী পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর ফলে কূটনৈতিক প্রতিবাদ এবং সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ছে। এমনকি দুই দেশের সেনাদের মধ্যে নিয়মিত গোলাগুলি চলছে, যার ফলে যুদ্ধের সম্ভাবনাও বাড়ছে।
২০১৯ সালে ভারত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেওয়ার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক একেবারে তলানিতে পৌঁছেছিল। পেহেলগামের সাম্প্রতিক হামলা এই উত্তেজনাকে আরও ঘনিভূত করেছে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব আবারও গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা বাড়ছে।
এদিকে, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কও এখন কঠিন সময় পার করছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের কারণে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এখন একটি নতুন সংকটের মুখোমুখি। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
চীনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কও উত্তেজনাপূর্ণ। লাদাখ সীমান্তে গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের পর, ভারত ও চীনের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন এখনো বিদ্যমান। ২০২৫ সালের মধ্যে সীমান্তে সেনা মোতায়ন, সামরিক মহড়া এবং বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞার কারণে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। চীন দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে, যার ফলে ভারত কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতার শিকার হচ্ছে।
২০২১ সালে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা গ্রহণের পর, ভারতের আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। যদিও ২০২৪ সালে কিছু সীমিত যোগাযোগ পুনরায় স্থাপন করা হয়েছে, তবুও ভারত আফগানিস্তানে তার ঐতিহ্যবাহী কৌশলগত প্রভাব ধরে রাখতে পারছে না। পাকিস্তান ও চীন আফগানিস্তানে তাদের প্রভাব বাড়িয়ে নিয়েছে, যার ফলে ভারতের কৌশলগত অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়ছে।
এছাড়া, ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, বিশেষত মুসলিম-বিরোধী বক্তব্য এবং হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি দক্ষিণ এশিয়ার মুসলিম প্রধান দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলছে। পাকিস্তান ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়ের অবস্থা নিয়ে আন্তর্জাতিক ফোরামে সরব রয়েছে, এবং মুসলিম দেশগুলো ভারতের ধর্মীয় রাজনীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। এই কারণে, ভারত দক্ষিণ এশিয়ার মুসলিম দেশগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারে।
ভারতকে ঘিরে দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক বাস্তবতা বর্তমানে গভীর অনিশ্চয়তায় পড়েছে। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নানা কারণে তলানিতে পৌঁছেছে, এবং এর নেতিবাচক প্রভাব ভারতের আন্তর্জাতিক অবস্থানেও পড়ছে। দক্ষিণ এশিয়া বর্তমানে একটি নতুন ধরনের কোল্ড ওয়ারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
বিশ্বব্যাপী বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে হলে ভারতের ভূমিকাকে আরও ভারসম্যপূর্ণ, কৌশলগত এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে হবে।
সোহাগ/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- তুমুল সংঘর্ষ পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে, ৫৪ জনের মৃত্যু
- বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে টেস্ট চলাকালে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু
- সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন বেতন বাড়লো সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের
- আলেমদের বেইজ্জতি করার পরিণতি সাতক্ষীরা চেয়ারম্যান
- তুমুল লড়াই, নিহত ভারতীয় সেনা
- ফিরে আসছেন শেখ হাসিনা
- কোন পরিমাণ টাকা থাকলে কোরবানি করা বাধ্যতামূলক
- ৫ আগস্ট সংসদ ভবনে লুকিয়ে থেকে কিভাবে বেঁচে ফিরলেন শিরীন শারমিন-পলকসহ ১২ জন
- ব্রেকিং নিউজ : বাংলাদেশিদের জন্য দুঃসংবাদ
- বাংলাদেশে সব রেল প্রকল্প স্থগিত করলো ভারত, এর পেছনে কারণ কি
- সমবয়সী না ছোট—কাকে বিয়ে করা উত্তম
- ভারত থেকে যে ৩৩ পন্য আমদানী বন্ধ
- আবারও ছুটি ও বেতন নিয়ে দারুণ সুখবর!
- ভারতকে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে, এটা কোনভাবেই কম হবে না
- উত্তেজনার মধ্যে বাংলাদেশকে বার্তা পাঠাল পাকিস্তান