‘ভয়ঙ্কর’ গুজবের শিকার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক: একটি মিথ্যা খবর বা বিকৃত তথ্য পুরো জাতিকে অস্থির করে তুলতে পারে। সৃষ্টি করতে পারে ভুল বোঝাবুঝি, সামাজিক বিভেদ—যা কখনোই কাম্য নয়। তাই গুজবের বিপরীতে সত্য তুলে ধরার দায়িত্ব আমাদের সবার। এই দায়িত্ববোধ থেকেই শুরু হয়েছে "রিউমার চেক" নামে একটি ধারাবাহিক উদ্যোগ।
সম্প্রতি গুজবের শিকার হয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার একটি ছবি এবং একটি সংবাদমাধ্যমের (ডিবিসি) লোগো ব্যবহার করে তৈরি করা হয় একটি ভুয়া ফটো কার্ড, যেখানে দাবি করা হয়, তিনি নাকি বলেছেন—"ডিসেম্বরে নির্বাচন না হলে দেশে চাঁদাবাজি বেড়ে যাবে।"
এই ভুয়া তথ্য ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন ভুয়া আইডি থেকে করা হয় সাইবার বুলিং। পরে ‘রিউমার স্ক্যানার’ নামে একটি ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করে—এই খবরটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। মির্জা ফখরুল এমন কোনো বক্তব্য দেননি, এবং ডিবিসি নিউজও এই ধরনের কোনো সংবাদ প্রচার করেনি। এটি ছিল একটি ডিজিটাল কারসাজির মাধ্যমে ছড়ানো গুজব।
এখানেই শেষ নয়—একই রাতে ছড়িয়ে পড়ে আরও কয়েকটি ভীতিকর গুজব।
গুজব ১: ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভিআইপি সেলে নাকি ভয়াবহ হামলা হয়েছে, এবং এতে মারা গেছেন সালমান এফ রহমান ও সাবেক বিচারপতি মানিক। সত্য: ঘটনা পুরোপুরি মিথ্যা। কেউ মারা যাননি, এমন কোনো হামলাও ঘটেনি।
গুজব ২: ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নাকি পদত্যাগ করেছেন। সত্য: নেতানিয়াহু এখনও পদে বহাল। ব্লগস্পটের মতো ফ্রি ডোমেইন সাইট ব্যবহার করে এই ভুয়া খবর ছড়ানো হয়।
গুজব ৩: প্রথম আলো নাম ব্যবহার করে একটি ভুয়া ফটো কার্ড ছড়ায়—ঢাকায় সৌদি যুবরাজের ছবি অবমাননার জেরে নাকি সৌদি আরবে গ্রেফতার হয়েছেন ২০ হাজার প্রবাসী। সত্য: এ ঘটনাও পুরোপুরি ভিত্তিহীন। প্রথম আলো এমন কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি।
গুজব ৪: এক নারীর উপর মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বর নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়, দাবি করা হয় এটি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনা। সত্য: ভিডিওটি ২০২৩ সাল থেকেই অনলাইনে রয়েছে এবং এটি একটি অভিনীত ভিডিও, বাস্তব নয়।
এইসব ঘটনা প্রমাণ করে—রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে প্রতিনিয়ত গুজব ছড়ানো হচ্ছে। গুজব ছড়াতে ব্যবহার করা হচ্ছে ফেক আইডি, ভুয়া পেজ এবং ডিজিটাল কারসাজি।
ড. মনিরুল ইসলাম আখুন (অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক)** বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়া এমন এক শক্তি যা একজন নির্দোষ মানুষকে দোষী এবং একজন দোষীকে নির্দোষ হিসেবে তুলে ধরতে পারে। আমরা যদি গুজবের বিরুদ্ধে সঠিক তথ্য না দেই, তাহলে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবেই।”
তিনি আরও বলেন, “গুজব ছড়ানোর প্রধান উদ্দেশ্য হলো সরকারের স্থিতিশীলতা নষ্ট করা। তাই আমাদের উচিত প্রতিটি মিথ্যার বিপরীতে সত্য তথ্য তুলে ধরা, এবং সেই সাথে গুজব ছড়ানো ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা।”
হাসনাত কাইয়ুম (সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট) বলেন, “আইন হওয়া উচিত অপরাধীর জন্য, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করার জন্য নয়। কঠোর আইন করতে গিয়ে নির্দোষ মানুষ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের দেশে এখনো উপনিবেশিক আইনের ছায়া রয়ে গেছে। এই আইনি কাঠামো বদলে দিতে হবে এবং প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করে গুজবের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিতে হবে।”
একটি জাতির ভবিষ্যৎ নির্ভর করে তথ্যের সত্যতা ও সচেতন নাগরিকের উপর। ফেক নিউজ ও গুজবের যুগে নিজেকে রক্ষা করতে হলে প্রথমেই সন্দেহ করুন, যাচাই করুন, তারপর শেয়ার করুন।
সোহাগ/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- বাংলাদেশের বিশাল কর্মসূচি নিয়ে যা লিখেছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম
- দল পেলেন মুস্তাফিজ
- ড. ইউনূসকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন সেনাপ্রধান
- সরকারি কর্মচারী কর্মকর্তাদের পথ চিরতরে বন্ধ হল
- এক আসনে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থী বাবা-ছেলের লড়াই
- বাংলাদেশের প্রতিবাদ দেখে ই/স/রা/ই/ল জুড়ে ব্যাপক তোলপাড় (ভিডিওসহ)
- ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে পণ্যের আমদানি নিষিদ্ধ ঘোষণা
- ভারত থেকে নেতা-কর্মীর উদ্দেশে কঠিন প্রতিশোধের বার্তা দিলেন শেখ হাসিনা
- মারা গেছেন তোফায়েল আহমেদ সত্য মিথ্যা যা জানা গেল
- বাংলাদেশের ‘পাসপোর্ট’ ইস্যুতে কড়া জবাব দিল ইসরাইলি গণমাধ্যমে
- জীবনসঙ্গী কি পূর্বনির্ধারিত নাকি মানুষের কর্মফল
- ড. ইউনূসকে ৫ বছর ক্ষমতায় চেয়ে চিঠি
- ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্পে কেপে উঠল রাজধানী ইসলামাবাদ
- বাংলাদেশকে ১০ বছর মেয়াদি গোল্ডেন ভিসা দেবে যে দেশ
- কিভাবে বুঝবেন সন্তান পর্নোগ্ৰাফিতে আসক্ত