পোশাকের স্বাধীনতা নিয়ে মিছিল, শিশু ধ/র্ষণের বিরুদ্ধে কেন চুপ

যতবার ধর্ষণের শিকার ৮ বছরের শিশুটির ছবি চোখের সামনে আসে, বুকটা ধক করে ওঠে। অবচেতনে চোখের কোণে পানি এসে যায়। কী ভয়াবহ বর্বরতা! এই শিশুটি তো কারও সন্তান, কারও আদরের ধন। কিন্তু সমাজ কি তাকে রক্ষা করতে পেরেছে? আমরা কি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ পৃথিবী দিতে পারছি? এমন এক সমাজে বাস করছি আমরা, যেখানে সিগারেট খাওয়ার স্বাধীনতা নিয়ে আন্দোলন হয়, কিন্তু শিশু ধর্ষণের বিরুদ্ধে কেউ রাজপথে নামেন না। পোশাকের স্বাধীনতা নিয়ে মিছিল হয়, অথচ আট বছরের নিষ্পাপ শিশুর জন্য একটি প্রতিবাদও হয় না! আমাদের সমাজ কি এতটাই পাষাণ হয়ে গেছে?
বাংলাদেশের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০২০) অনুযায়ী, ১৬ বছরের নিচে কোনো শিশুকে ধর্ষণ করলে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই শাস্তিগুলো যথাযথভাবে কার্যকর হচ্ছে কি?
আমাদের আদালতে ধর্ষণের মামলাগুলো বছরের পর বছর পড়ে থাকে। ভিকটিম বিচার পায় না, অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। এত বড় বড় আইন থাকা সত্ত্বেও কেন বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলছে? আইন কেবল কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ হয়ে থাকে।
আইন কেবল কাগজে থাকলে চলবে না, তার বাস্তবায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, আমাদের দেশে ক্ষমতাবান অপরাধীরা ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ করেও বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায়, আর নির্যাতিত পরিবারগুলো বার বার সমাজের চোখে কলঙ্কিত হয়!
বিশ্বের প্রায় সব ধর্মেই ধর্ষণের শাস্তি কঠোরভাবে নির্ধারিত রয়েছে। ইসলাম, খ্রিষ্টান, হিন্দু, বৌদ্ধ—প্রায় সকল ধর্মে এই অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।
ইসলামে ধর্ষণের শাস্তি হলো পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা বা ফাঁসি। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে—‘ধর্ষকের জন্য কঠিন শাস্তি নির্ধারিত রয়েছে, যেন সে অন্যদের জন্য শিক্ষা হয়’ (সূরা আন-নুর, ২৪:২)। হাদিসেও উল্লেখ আছে, যে ব্যক্তি ধর্ষণ করবে, তাকে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।
খ্রিষ্টান ধর্মে বাইবেলে ধর্ষণের শাস্তি কঠোরভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। লেবীয় পুস্তক ২০:১০-১৬ অনুযায়ী, ধর্ষকের শাস্তি পাথর নিক্ষেপে হত্যা বা মৃত্যুদণ্ড।
হিন্দু ধর্মে মনুস্মৃতি (৮:৩২৩) অনুযায়ী, ধর্ষকের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। মহাভারতে ধর্ষণকারীদের জন্য অঙ্গচ্ছেদ (পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলা) বা মৃত্যুদণ্ডের বিধান ছিল।
বৌদ্ধ ধর্মে ধর্ষণকে গুরুতর পাপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। "পঞ্চশীল" অনুযায়ী, ধর্ষণকারী পুনর্জন্মে চরম শাস্তি পাবে এবং নরকে যাবে।
পৃথিবীর সকল ধর্মই ধর্ষকদের জন্য কঠিন শাস্তি কার্যকর করার কথা বলছে, তাহলে কেন আমরা সেই শাস্তি কার্যকর করতে পারছি না?
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, যার কারণে সেসব দেশে ধর্ষণের মত জঘন্য অপরাধ প্রায় শূন্যের কোঠায় চলে গেছে।
সৌদি আরব- ধর্ষণের শাস্তি শিরশ্ছেদ (শরীয়াহ অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ড)। কিছু ক্ষেত্রে জনসমক্ষে পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করা হয়।
চীন- ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
ইরান- শরীয়াহ আইন অনুযায়ী ধর্ষণের জন্য ফাঁসি বা শিরশ্ছেদ।
সংযুক্ত আরব আমিরাত (দুবাই)- ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
তাহলে প্রশ্ন উঠছে—আমাদের দেশের ধর্ষণকারীরা কেন এখনো এসব জঘন্য অপরাধ করতে সাহস পায়? এটা আমাদের সরকারের উদাসীনতার প্রতিফলন ছাড়া আর কিছু নয়!
আমাদের সমাজ কি এই ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারে না? এটা শুধুমাত্র সরকারের দায়িত্ব নয়, সমাজের প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব—এই দানবদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। আমরা যদি চুপ থাকি, তবে একদিন আমাদের সন্তানরাও এই নির্মমতার শিকার হবে! ধর্ষণের শাস্তি দ্রুত কার্যকর করতে হবে। "যাবজ্জীবন" নয়, ধর্ষকের ফাঁসি চাই—তাও প্রকাশ্যে, যাতে অন্যরা শিক্ষা নেয়। ধর্ষণ মামলার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আরও শক্তিশালী করতে হবে। শিশুরা কোথায় যাচ্ছে, কার সাথে মিশছে—পরিবারকে সবসময় খেয়াল রাখতে হবে। ধর্ষকদের সামাজিকভাবে একঘরে করতে হবে। কেউ ধর্ষককে সমর্থন করলে, তাকেও অপরাধীর তালিকায় ধরতে হবে।
আজ যারা চুপ করে আছেন, তারা জানুক—এই অপরাধীদের হাত থেকে তাদের সন্তানও নিরাপদ নয়। একদিন হয়তো এই নির্মমতা তাদের ঘরেও আসবে! আমরা কি তখনও চুপ থাকবো? না, আমরা প্রতিবাদ করবো! আমরা চাই তৎক্ষণাৎ শাস্তি, চাই ন্যায্য বিচার!
একটি ৮ বছরের নিষ্পাপ শিশুকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে, অথচ সমাজ চুপ! আমরা এই নির্লজ্জ সমাজের বিরুদ্ধে, আমরা সুবিচার চাই! ধর্ষকদের জন্য একটাই শাস্তি—ফাঁসি চাই!
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- অবশেষে ৫ বছর পর আরব আমিরাতের ভিসা নিয়ে সুখবর
- আরব আমিরাতের গোল্ডেন ভিসা চালু
- ২০২৫ সালে সৌদি প্রবাসীদের আকামা নবায়নের জন্য নতুন আইন ঘোষণা
- ৮ বছরের শিশু ধ/র্ষণে বোনের স্বামী ও শ্বশুর আটক, বেড়িয়ে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
- চিরতরে হাসিনার হাসি বন্ধ করল জাতিসংঘ
- হঠাৎ ফেসবুকে মাশরাফির আবেগঘন বার্তা মুহূর্তেই ভাইরাল
- ৪০ বছর পর বিশাল বড় সুখবর পেলেন শিক্ষকরা
- ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনায় বেড়িয়ে এল চাঞ্চল্যকর সব তথ্য
- ১ শর্তের বিনিময়ে আইপিএলে খেলতে পারেন মুস্তাফিজ
- মার্কিন গোয়েন্দা প্রধানের সঙ্গে শেখ হাসিনার গোপন বৈঠকে: যা জানা গেল
- যদি ৫ আগস্ট স্বৈরশাসক হাসিনা ধূলিস্যাৎ না হতো, তবে ৬ আগস্ট জাতীয় পত্রিকার শিরোনাম কেমন হতো
- দুবাইয়ে দুর্ঘটনায় সংগীত শিল্পী মমতাজ নিহত, সত্যতা নিয়ে যা জানা গেল
- কমে গেল ডলারের বিনিময় হার (০৫ মার্চ)
- ওবায়দুল কাদেরের মৃত্যু: আসল সত্যতা প্রকাশ
- ১০ কোটি টাকা ও এমপি পদের প্রলোভন দেখিয়ে এনসিপিতে নুরর দলের ২০ নেতা: যা জানা গেল