রবিবার ঢাকার বায়ু দূষণের কারণে শহরটি বিশ্বের শীর্ষ দূষিত শহরের তালিকায় তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। এদিন ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ছিল ২০৫, যা 'খুবই অস্বাস্থ্যকর' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই স্কোর অনুযায়ী, ঢাকার বাতাসে বসবাস করা মানুষের জন্য শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা, স্বাস্থ্য ঝুঁকি এবং নানা শারীরিক অসুস্থতা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সকাল ৯ টায় আইকিউএয়ারের প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, ঢাকার ছয়টি এলাকা ছিল 'খুবই অস্বাস্থ্যকর' বাতাসে। এসব এলাকাগুলোর একিউআই স্কোর ছিল বিপজ্জনক মাত্রায়, যার মধ্যে কিছু এলাকাতো ২৫০ এর কাছাকাছি স্কোর ধারণ করছিল। সেই এলাকা গুলো হলো:

- মার্কিন দূতাবাস এলাকা: ২৫৩- মিরপুরের ইস্টার্ন হাউজিং: ২৪৬- আগাখান একাডেমী: ২৪৫- গুলশান লেক পার্ক: ২২৬- গুলশান ২ (রব ভবন): ২২৬- কল্যাণপুর: ২১১

বিশ্বের শীর্ষ দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা:

বিশ্বের শীর্ষ দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা রয়েছে তৃতীয় স্থানে। একিউআই স্কোরের ভিত্তিতে, বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর হিসেবে অবস্থান করছে ভারতের দিল্লি (৩৪৬ একিউআই), যা ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বাতাসের মানে পড়ছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর (২৩৫ একিউআই), এবং তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছে ঢাকা (২০৫ একিউআই)। চতুর্থ স্থানে রয়েছে ঘানার আক্রা (২০৩ একিউআই)।

আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ু মানের বিভিন্ন স্তর:

- ০–৫০: বাতাসের মান ভালো - ৫১–১০০: সহনীয় বা মাঝারি - ১০১–১৫০: সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর - ১৫১–২০০: সাধারণভাবে অস্বাস্থ্যকর - ২০১–৩০০: খুবই অস্বাস্থ্যকর - ৩০১ বা তার বেশি: দুর্যোগপূর্ণ

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানায়, এমন বায়ু মান শিশু, বৃদ্ধ, এবং শ্বাসযন্ত্রের সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করে। ঢাকার বর্তমান বায়ু দূষণের কারণে শহরের বাসিন্দারা শ্বাস নিতে সমস্যায় পড়ছেন এবং তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপনেও এর গভীর প্রভাব পড়ছে।

বায়ুদূষণ শুধুমাত্র ঢাকার সমস্যা নয়, এটি পৃথিবীর অধিকাংশ বড় শহরের জন্য একটি উদ্বেগজনক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বায়ু দূষণ বেশি প্রকট। ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে পরিবেশ দূষণের কারণে বহু মানুষ শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। এর ফলে, শুধু দেশীয় অর্থনীতির ওপর নয়, মানব জীবনের ওপরও গুরুতর প্রভাব পড়ছে।

এ বিষয়ে সরকারের পাশাপাশি জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হয়, তবে ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। শুধু প্রশাসন নয়, প্রতিটি নাগরিকের উচিত সচেতন হয়ে পরিবেশ দূষণ রোধে চেষ্টা করা।