অবৈধ মজুদকারীদের তালিকা, শক্তিশালী সিন্ডিকেট ভাঙতে শুরু হয়েছে অভিযান

ভরা মৌসুমে চালের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, এবং সরকারের খাদ্যগুদামে গত বছরের তুলনায় মজুদ কম থাকায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। গত এক মাসে মোটা চালের দাম কেজিতে পাঁচ থেকে সাত টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। চালের মূল্যবৃদ্ধির পেছনে রয়েছে শক্তিশালী একটি সিন্ডিকেট, যা বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে।
এই সিন্ডিকেট ভাঙতে সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থা ১২ দফা সুপারিশ দিয়েছে। সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে বড় চালকল ও মোকামে নজরদারি বাড়ানো, চালকল মালিকদের লাইসেন্সের বিপরীতে অতিরিক্ত ধান-চাল মজুদ না করতে দেওয়া এবং অবৈধ মজুদকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা।
গোয়েন্দা সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী, খাদ্য মন্ত্রণালয় অবৈধ মজুদকারীদের একটি তালিকা প্রস্তুত করছে। এই তালিকার ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে এসব মজুদকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এরই মধ্যে, কুষ্টিয়ার খাজানগরের বৃহত্তম চাল মোকাম রশিদ অ্যাগ্রো ফুড প্রডাক্টস লিমিটেডের মালিক আব্দুর রশিদ, যিনি "চাল রশিদ" নামে পরিচিত, তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
খাদ্যসচিব মো. মাসুদুল হাসান বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বলেন, "গোয়েন্দা প্রতিবেদন পাওয়ার পর থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু হয়েছে। যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে অভিযান চলছে এবং অপরাধ অনুযায়ী বড় ধরনের জরিমানা করা হচ্ছে। কিছু গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। তবে আমন সংগ্রহ কর্মসূচি চলমান থাকায় অভিযান কিছুটা সীমিত হচ্ছে।"
গোয়েন্দা সুপারিশে আরও বলা হয়েছে যে, চালকল মালিক, করপোরেট ব্যবসায়ী, মজুদদার ও মধ্যস্বত্বভোগীদের সমন্বয়ে গড়া সিন্ডিকেটের কারণে চালের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নিয়মিত অভিযান চালানো উচিত। এছাড়া চালকল মালিকরা যেন তাদের লাইসেন্সের বিপরীতে অতিরিক্ত ধান-চাল মজুদ করতে না পারেন, তার জন্য আরও বেশি নজরদারি বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে।
নতুন এই সুপারিশে আরও বলা হয়েছে, সরকারি পরিদর্শকদের মাধ্যমে নজরদারি প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজ করে স্বচ্ছতা আনা এবং চালের বস্তায় উৎপাদনকারী মিলের নাম, জেলা, উপজেলা, উৎপাদনের তারিখ, মিল গেট মূল্য, এবং চালের জাত উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক করতে হবে। ব্যবসায়ীদের নির্দিষ্ট পরিমাণ চাল নির্দিষ্ট সময়ে আমদানি ও সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
এছাড়া, বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবি এবং ওএমএস কর্মসূচি আরও জোরদার করতে হবে। কৃষিপণ্য বিপণনে হাতবদল কমাতে এবং চাহিদা ও সরবরাহের বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি সুসংগঠিত বাজার কাঠামো তৈরি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ১০ লাখ ৯৩ হাজার ৫৬২ টন খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে, এর মধ্যে চাল ৬ লাখ ৭৩ হাজার ৩৯৩ টন এবং গম ৪ লাখ ১৯ হাজার ৩৭৭ টন। গত বছরের একই সময়ে সরকারি মজুদ ছিল ১৪ লাখ টনের বেশি, যার মধ্যে চাল ছিল ১২ লাখ টনের বেশি। তবে এবার খাদ্য মজুদ কমে গেছে প্রায় ৩ লাখ টন। বিশেষ করে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা সহ কিছু অঞ্চলের ভয়াবহ বন্যায় ফসলের ক্ষতি হওয়ায় এবার ধান-চালের উৎপাদন কম হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্র মতে, চালের ব্যবসায়ীদের একটি অসাধু সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে চাল মজুদ করে বাজারে দাম বাড়িয়ে দেয়। এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীও জড়িত, যারা সরকারের বিভিন্ন কৌশল ফাঁস করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে। ৫ আগস্ট সরকারের পটপরিবর্তনের পর সিন্ডিকেট কিছুটা শিথিল হলেও এখন আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে, যার ফলে চালের দাম বাড়ছে।
এই পরিস্থিতিতে, সরকারের শীর্ষ মহল চাল সিন্ডিকেটের বিষয়ে একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয়। সম্প্রতি, গোয়েন্দা প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়, এবং এসব অবৈধ মজুদকারীদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- দল পেলেন মুস্তাফিজ
- সরকারি কর্মচারী কর্মকর্তাদের পথ চিরতরে বন্ধ হল
- ১২ ঘণ্টায় ১,০৫৭ জন পুরুষকে খুশি করে বিশ্ব রেকর্ড গড়লেন ২২ বছরের যুবতী
- ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে পণ্যের আমদানি নিষিদ্ধ ঘোষণা
- ফাঁস হলো ষড়যন্ত্র, বাংলাদেশ দখলের পরিকল্পনা করছে ভারত
- মারা গেছেন তোফায়েল আহমেদ সত্য মিথ্যা যা জানা গেল
- গাজায় নিহত ইসরায়েলি ৪১২ সেনা নিহত
- ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেওয়া বৃদ্ধের আসল কারণ জানালেন প্রত্যক্ষদর্শীরা
- কেন বাতিল হচ্ছে বাংলাদেশিদের ভিসা!
- বাংলাদেশে সব রেল প্রকল্প স্থগিত করলো ভারত, এর পেছনে কারণ কি
- ৫ বছর পর স্বর্ণের দাম বাড়বে নাকি কমবে, জানালেন বিশেষজ্ঞরা
- বাংলাদেশকে সুখবর দিলো চীন
- ড. ইউনূসকে নিয়ে অবিশ্বাস্য মন্তব্য করলেন হিলারি ক্লিনটন
- ক্ষেপণাস্ত্র ড্রোন তৈরির মূল্যবান খনিজ আছে বাংলাদেশে
- মোবাইলেই জেনে নিন—বাপ-দাদার নামে কোথায় কত জমি আছে!