২০২৪ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আসর শুরু হতে আর মাত্র তিন মাস বাকি। এই সময়টা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই সময়ের মধ্যে তিনটি ওয়ানডে সিরিজ অনুষ্ঠিত হবে, যেগুলোর মাধ্যমে চূড়ান্ত স্কোয়াড গঠন করা হবে। যদিও বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের দল মোটামুটি স্থির, তবে কিছু জায়গা এখনও অনিশ্চিত। ১০ জনের জায়গা প্রায় নিশ্চিত হলেও, বাকি ৫টি জায়গার জন্য পারফরম্যান্সের উপর নির্ভর করছে কে সুযোগ পাবেন।

নিশ্চিত ১০ জন:

বর্তমানে বাংলাদেশের স্কোয়াডে মোট ১০ জনের জায়গা নিশ্চিত, যাদের পারফরম্যান্স ও অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে তারা স্কোয়াডে থাকবেন। এই ১০ জনের মধ্যে রয়েছেন:

1. লিটন দাস – লিটনের স্কোয়াডে জায়গা প্রায় নিশ্চিত, যদিও তার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স নিয়ে কিছু বিতর্ক রয়েছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম দুটি ম্যাচে ব্যর্থ হলেও, তার প্রতিভা ও সাম্প্রতিক সাফল্য তাকে দলে রাখার জন্য যথেষ্ট।

2. সৌম্য সরকার – সৌম্য সরকারের পারফরম্যান্স মিশ্র হলেও, তার ক্রিকেটে গভীর মনোযোগ ও প্রতিভা তাকে স্কোয়াডে রাখার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী প্রমাণ।

3. নাজমুল হোসেন শান্ত – শান্তর ওয়ানডে ব্যাটিং এবং ক্যাপ্টেনশিপের রেকর্ড ভালো। আফগানিস্তানের বিপক্ষে খারাপ পারফরম্যান্সের পরও, তার স্থান স্কোয়াডে নিশ্চিত হয়ে গেছে।

4. তাওহিদ হায়দার – তাওহিদের স্কোয়াডে থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তার ব্যাটিং এবং ক্রিকেট সেন্স তাকে ওয়ানডে ফরম্যাটে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে গড়ে তুলেছে।

5. মুশফিকুর রহিম – বাংলাদেশের ক্রিকেটে মুশফিকের অবদান অবিস্মরণীয়। তার অভিজ্ঞতা এবং ধারাবাহিক পারফরম্যান্স তাকে স্কোয়াডে রাখার জন্য অপরিহার্য।

6. মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ – মাহমুদউল্লাহ বাংলাদেশের মিডল অর্ডারের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৯৮ রানের ইনিংস তার স্কোয়াডে থাকার সম্ভাবনা আরও মজবুত করেছে।

7. মেহেদী হাসান মিরাজ – মিরাজের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স এবং দলের জন্য তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তাকে স্কোয়াডে রাখার জন্য অপরিহার্য।

8. মুস্তাফিজুর রহমান – বিশ্বের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার মুস্তাফিজুর রহমানের স্কোয়াডে থাকা নিশ্চিত। তার ধারাবাহিক বোলিং এবং ম্যাচ উইনিং পারফরম্যান্স তাকে দলে রাখার জন্য অপরিহার্য।

9. তাসকিন আহমেদ – তাসকিন বাংলাদেশের প্রধান পেস বোলার। তার ধারাবাহিকতা এবং কঠোর পরিশ্রম তাকে স্কোয়াডে রাখার জন্য প্রমাণিত করেছে।

10. শরিফুল ইসলাম – শরিফুল ইসলামের গতির বোলিং এবং প্রভাব বিস্তার করার ক্ষমতা তাকে স্কোয়াডে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদিও আফগানিস্তানের বিপক্ষে কিছুটা খারাপ পারফরম্যান্স ছিল, তার সাম্প্রতিক ফর্ম তাকে স্কোয়াডে নিশ্চিত করেছে।

বাকি ৫ জায়গার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা:

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্কোয়াডে এখনও ৫টি জায়গা খালি রয়েছে, এবং এই জায়গাগুলোর জন্য বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার প্রতিযোগিতা করছেন। তাদের মধ্যে কিছু বড় নাম রয়েছে, যারা এই জায়গাগুলোর জন্য খুবই জোরালো দাবি জানাচ্ছেন:

1. সাকিব আল হাসান – বাংলাদেশের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার, সাকিবের স্কোয়াডে থাকা প্রায় নিশ্চিত বলে মনে হলেও, তার ফিটনেস ও সাম্প্রতিক পরিস্থিতি কিছুটা অনিশ্চিত। আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিনি খেলতে পারেননি এবং তার ফিটনেস নিয়ে কিছু প্রশ্ন রয়েছে। তবে, সাকিব যদি ফিট হন এবং মানসিকভাবে প্রস্তুত হন, তার স্কোয়াডে থাকা সম্ভাবনা অনেক বেশি।

2. তামিম ইকবাল – তামিমের স্কোয়াডে থাকার সম্ভাবনা বর্তমানে কিছুটা কম। তার ফিটনেস এবং সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের কারণে তার স্কোয়াডে জায়গা নিয়ে কিছু সন্দেহ রয়েছে। তবে, তিনি যদি সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং ফর্মে ফিরেন, তার স্কোয়াডে থাকার সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে।

3. জাকির আলী / নাহিদ রানা – জাকির আলী সম্প্রতি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ভালো পারফর্ম করেছেন, তবে তার ওয়ানডে স্কোয়াডে জায়গা পাওয়া এখনও নিশ্চিত নয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে ভালো করতে পারলে তার স্কোয়াডে জায়গা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

4. এনামুল হক বিজয় – এনামুল হক বিজয়ের স্কোয়াডে স্থান এখনও নিশ্চিত নয়, তবে তার ব্যাটিং ফর্ম ভালো হলে তিনি সুযোগ পেতে পারেন। তবে, তার প্রতিযোগিতা অন্য ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে চলছে।

5. রিশাদ হোসেন / তাইজুল ইসলাম – এই দুটি স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে স্কোয়াডে জায়গা পেতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের পারফরম্যান্সের ওপর নির্ভর করবে তারা স্কোয়াডে জায়গা পাবেন কিনা।

বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্কোয়াড গঠন এখনো চলমান, এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের ফলাফল অনেক কিছু নির্ধারণ করবে। সাকিব, তামিম, জাকির আলীসহ বেশ কিছু ক্রিকেটারের স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্তি নির্ভর করছে তাদের পারফরম্যান্সের ওপর। আশা করা যায়, বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা তাদের সেরা ফর্মে ফিরে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য প্রস্তুতি নেবেন।