| ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১

পঞ্চপান্ডবের পর শূন্য স্থান পূরণ করবেন যারা

খেলাধুলা ডেস্ক . বিনোদন৬৯.কম
২০২৪ অক্টোবর ১১ ২০:৪১:৪৪
পঞ্চপান্ডবের পর শূন্য স্থান পূরণ করবেন যারা

শাকিব আল হাসান ও মাহমুদুল্লাহর অবসর ঘোষণার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট নতুন এক যুগে প্রবেশ করছে। তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম এবং মাশরাফি মর্তুজার মতো বিগ ফাইভের সদস্যরা এখন T20 ক্রিকেটে নেই। ইতিহাসে বাংলাদেশ এই ফরম্যাটে তেমন শক্তিশালী নয়, আর তাই ২০২৬ সালের T20 বিশ্বকাপের জন্য তাদের নতুন করে পরিকল্পনা করতে হবে। আসুন, দেখি কিভাবে বাংলাদেশ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারে।

শাকিবের বিকল্প খুঁজে বের করা

শাকিব আল হাসানের মতো একজন প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের বিকল্প খুঁজে পাওয়া সহজ নয়। তিনি ছিলেন দলের সবচেয়ে দক্ষ বোলার এবং মিডল অর্ডারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাঁর অভিজ্ঞতা এবং ক্রিকেটীয় জ্ঞান অতুলনীয়। বর্তমানে বাংলাদেশের কাছে এমন কোনো মিডল অর্ডার ব্যাটার নেই, যিনি চার ওভার বোলিং করতে পারেন—এটি একটি বড় সমস্যা।

মেহেদী হাসান মিরাজ কিছু T20 ম্যাচে ব্যাটিং অলরাউন্ডার হিসেবে খেলেছেন, তবে তার বোলিং T20 ফরম্যাটের জন্য উপযুক্ত নয়। শাকিবের জায়গায় নতুন দুই খেলোয়াড় প্রয়োজন, কিন্তু এই পরিবর্তন কার্যকর করা সহজ হবে না।

মাহমুদুল্লাহ তার অবসর ঘোষণায় কিছু সম্ভাব্য ব্যাটারের নাম উল্লেখ করেছেন, কিন্তু বাংলাদেশকে সম্পূর্ণ মিডল অর্ডার পুনর্বিবেচনা করতে হতে পারে। তাদের এমন খেলোয়াড় খুঁজে বের করতে হবে, যারা আধুনিক T20 ব্যাটিংয়ের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। মাহমুদুল্লাহ ১৪ থেকে ২০ ওভারের মধ্যে খেলার ধরন পরিবর্তন করে প্রথম খেলোয়াড় ছিলেন, কিন্তু এখন তা দ্রুত পুরোনো হয়ে যাচ্ছে। ২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে তার স্ট্রাইক রেট ১০৩.৭৮ থেকে ১৩২.৩৩ এ উন্নীত হয়েছিল, তবে গত চার বছরে এটি ১১০.২০ এ নেমে এসেছে।

বাংলাদেশ কত দ্রুত সঠিক খেলোয়াড় খুঁজে পাবে? দেশে T20 ম্যাচের সংখ্যা কম এবং বিসিবি বিদেশী লিগে খেলায় NOC দিতে আগ্রহী নয়।

পরবর্তী তামিম কোথায়?

তামিম ইকবালের শেষ T20I ম্যাচের পর থেকে বাংলাদেশ ২০২০ সালের মার্চ থেকে ১৭ জন ভিন্ন ওপেনার পরীক্ষা করেছে। তামিম ২০২২ সালে অবসর ঘোষণা করেন এবং তার আগের বছর মোহাম্মদ নাঈম ও লিটন দাসকে সুযোগ দেওয়ার জন্য বিশ্রাম নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই পরিকল্পনা সফল হয়নি, কারণ লিটন ছাড়া অন্য ওপেনাররা নিয়মিতভাবে খেলতে পারেনি।

২০২৩ সালে রনি তালুকদার একমাত্র উল্লেখযোগ্য ওপেনার ছিলেন, যিনি ৯ ইনিংসে ১৪১.৯৫ স্ট্রাইক রেট তৈরি করেছেন, তবে তাকে বেশি সুযোগ দেওয়া হয়নি। বর্তমান ওপেনারদের মধ্যে তানজিদ হাসান ও পারভেজ হোসেন ইমন লিটনের সাথে যুক্ত হয়েছেন, কিন্তু লিটনও ভারত সফরে সমস্যায় রয়েছেন। তামিম এখনও দেশের একমাত্র সফল ওপেনার, শেষ BPL-এ সর্বাধিক রান সংগ্রহ করে ফরচুন বরিশালকে শিরোপা এনে দিয়েছেন।

হৃদয় মুশফিকের জায়গায়

মুশফিকুর রহিম যখন T20I থেকে অবসর নিয়েছিলেন, তখন তৌহিদ হৃদয় দলের মধ্যে একটি শক্তিশালী ইনিংস খেলেছিলেন। তিনি একটি সফল BPL কাটান এবং নং ৪-এ ব্যাটিং করে দ্রুত রান সংগ্রহ করেন, যা মুশফিকের পছন্দসই পজিশন ছিল। এটি ছিল আদর্শ স্থানান্তর, কিন্তু বাংলাদেশ দলের ম্যানেজমেন্ট হৃদয়কে ODI দলের মধ্যে অতিরিক্ত পরিবর্তন করেছে, ফলে তিনি তার T20 ফর্ম হারাতে পারেন।

হৃদয়ের শট-নির্মাণ প্রমাণ করে যে যদি তাকে মিডল অর্ডারে নিজের স্থান দেওয়া হয়—আদর্শভাবে নং ৪—তিনি ব্যাটিং অর্ডারে স্থিতিশীলতা যোগ করতে পারেন এবং ইনিংসকে গভীরতেও নিয়ে যেতে পারেন। মুশফিকের জন্য T20-তে এই ভূমিকা বুঝতে বছর লেগেছিল, হৃদয় হয়তো ততদিন অপেক্ষা করতে হবে না, তবে দলের ম্যানেজমেন্টকে সঠিক পরিকল্পনা করতে হবে।

মাশরাফির পরিবর্তন

বাংলাদেশের ফাস্ট বোলাররা গত তিন বছরে ম্যাচ বিজেতা হয়ে উঠেছে। তারা তিনটি ফরম্যাটে ভালোভাবে মানিয়ে নিয়েছে, এবং মুস্তাফিজুর রহমান তাদের সেরা T20 বোলার হিসাবে বিবেচিত। টাসকিন আহমেদও দ্রুত উন্নতি করেছে, আর তানজিম হাসান বিশেষত সহায়ক অবস্থায় চমৎকার তৃতীয় পেসার হিসেবে কাজ করেছে।

বাংলাদেশ মাশরাফির পরিবর্তে ফাস্ট বোলার হিসেবে সফল হয়েছে—যিনি সাত বছর আগে T20 থেকে অবসর নিয়েছিলেন। তবে, তারা মাশরাফির মতো একজন ভালো অধিনায়ক খুঁজে পায়নি। নাজমুল হোসেন শান্ত T20-তে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। অধিনায়কত্ব ভাগ করা একটি সম্ভাব্য বিকল্প মনে হচ্ছে, কিন্তু তাদের একজন এমন ব্যক্তির প্রয়োজন, যিনি ড্রেসিং রুমের সম্পূর্ণ সম্মান অর্জন করতে পারবেন। যদি তারা সেই ব্যক্তিকে খুঁজে পায়, তবে সম্ভবত তারা শান্তকে তার সেরা ফর্মে ফিরিয়ে আনতে পারবে।

সামনের চ্যালেঞ্জ

বাংলাদেশের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। নতুন খেলোয়াড়দের দ্রুত গড়ে তোলা, অভিজ্ঞতার অভাব পূরণ করা এবং বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া—এটি সবই তাদের জন্য জরুরি। নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড়দের সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের ক্রিকেট উন্নতির দিকে এগিয়ে যেতে পারে। সেই সাথে, প্রশাসনিক স্তরে শক্তিশালী সিদ্ধান্ত গ্রহণও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশের ক্রিকেটে এটি একটি নতুন অধ্যায় এবং ভবিষ্যৎ নির্ধারণে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ক্রিকেটের দুনিয়ায় প্রতিযোগিতা ক্রমাগত বাড়ছে এবং বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে টিকে থাকার জন্য নিজেদের নতুন করে তৈরি করতে হবে।

আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

ক্রিকেট

হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শেষ হল বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ নির্ধারণ ম্যাচ, দেখে নিন ফলাফল

হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শেষ হল বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ নির্ধারণ ম্যাচ, দেখে নিন ফলাফল

৬ বছর পর ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় ছিনিয়ে এনেছে বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ের চেয়ে এই ম্যাচে ...

আইপিএলে দল না পেয়ে নতুন ঠিকানায় মুস্তাফিজ

আইপিএলে দল না পেয়ে নতুন ঠিকানায় মুস্তাফিজ

পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) আসন্ন আসরে খেলার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। ইতোমধ্যেই ...

ফুটবল

নতুন চমক নিয়ে ২০৩৪ বিশ্বকাপের নাম ঘোষণা করলো ফিফা

নতুন চমক নিয়ে ২০৩৪ বিশ্বকাপের নাম ঘোষণা করলো ফিফা

আগেই বেশ কিছুটা নিশ্চিত ছিল যে, ২০৩৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপের আয়োজক হবে সৌদি আরব। এবার ...

মুখোমুখি লড়াইয়ে নামবেন পুরোনো ‘শ'ত্রু’ নেইমার-এমবাপে

মুখোমুখি লড়াইয়ে নামবেন পুরোনো ‘শ'ত্রু’ নেইমার-এমবাপে

২০১৭ সালে বার্সেলোনা ছাড়ার পর নেইমার জুনিয়র রেকর্ড ২২২ মিলিয়ন ইউরোতে পিএসজিতে যোগ দেন। একই ...