| ঢাকা, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১

পঞ্চপান্ডবের পর বাংলাদেশে T20 ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ কেমন হবে

খেলাধুলা ডেস্ক . বিনোদন৬৯.কম
২০২৪ অক্টোবর ১১ ২০:০৪:৩৩
পঞ্চপান্ডবের পর বাংলাদেশে T20 ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ কেমন হবে

শাকিব আল হাসান এবং মাহমুদুল্লাহর অবসর ঘোষণার পর বাংলাদেশ এখন নতুন এক অধ্যায়ে প্রবেশ করছে। তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম এবং মাশরাফি মর্তুজার মতো বিগ ফাইভের সদস্যরা এখন T20 ক্রিকেটে নেই। বাংলাদেশ historically এই ফরম্যাটে দুর্বল, এবং এখন তাদের ২০২৬ সালের T20 বিশ্বকাপের জন্য পরিকল্পনা করতে হবে। চলুন দেখি, বাংলাদেশকে কি কি বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে।

শাকিবের বিকল্প খুঁজে বের করা

শাকিব আল হাসানের মতো একজন খেলোয়াড়ের বিকল্প খুঁজে পাওয়া সহজ নয়। তিনি ছিলেন দলের সবচেয়ে দক্ষ বোলার এবং মিডল অর্ডারে একটি স্থায়ী ভূমিকা পালন করতেন। শাকিবের অভিজ্ঞতা এবং ক্রিকেটের নুন্যতম জ্ঞানও অতুলনীয়। বর্তমানে বাংলাদেশের কাছে এমন কোনো মিডল অর্ডার ব্যাটার নেই, যিনি চার ওভার বোলিং করতে পারেন—এটি বেশিরভাগ দলের জন্যও একটি সমস্যা।

মেহেদী হাসান মিরাজ T20-তে ব্যাটিং অলরাউন্ডার হিসেবে কিছু ম্যাচ খেলেছেন, তবে তার বোলিং T20 ফরম্যাটের জন্য উপযুক্ত নয়। শাকিবের বিকল্প হিসেবে বাংলাদেশের পরবর্তী T20I দায়িত্বে দুই খেলোয়াড় প্রয়োজন হবে। তবে এটি সহজে করতে গেলে নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে।

মাহমুদুল্লাহ তার T20 retirement ঘোষণায় কিছু সম্ভাব্য ব্যাটারের নাম উল্লেখ করেছিলেন, কিন্তু বাংলাদেশকে পুরো মিডল অর্ডার পুনর্বিবেচনা করতে হতে পারে। তারা এমন ক্রিকেটার খুঁজতে হবে যারা আধুনিক T20 ব্যাটিংয়ের প্রয়োজনীয়তা মোকাবেলা করতে পারবে। মাহমুদুল্লাহ নিশ্চিতভাবেই ছিলেন প্রথম ব্যাটার যিনি ১৪ থেকে ২০ ওভার পর্যন্ত ব্যাটিংয়ের জন্য তার খেলার ধরন পরিবর্তন করেছিলেন, কিন্তু এখন এই ধরন দ্রুত পুরোনো হয়ে যাচ্ছে। ২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে, মাহমুদুল্লাহর স্ট্রাইক রেট ১০৩.৭৮ থেকে ১৩২.৩৩ এ উন্নীত হয়েছিল, কিন্তু গত চার বছরে এটি ১১০.২০-এ নেমে এসেছে।

বাংলাদেশ কত দ্রুত সঠিক খেলোয়াড় খুঁজে পাবে? দেশের ভিতরে T20 ম্যাচের সংখ্যা কম, এবং বিসিবি সাধারণত বিদেশী লিগে খেলার জন্য NOC দিতে আগ্রহী নয়।

পরবর্তী তামিম কোথায়?

তামিম ইকবালের শেষ T20-এর পর বাংলাদেশ ২০২০ সালের মার্চ থেকে ১৭ জন ভিন্ন ওপেনারকে পরীক্ষা করেছে। তামিম ২০২২ সালে অবসর ঘোষণা করেন, এবং তার আগের বছর মোহাম্মদ নাঈম এবং লিটন দাসকে সুযোগ দেওয়ার জন্য বিশ্রাম নিয়েছিলেন। কিন্তু পরিকল্পনা সফল হয়নি, কারণ লিটন ছাড়া বাকিরা নিয়মিতভাবে ওপেন করেনি।

২০২৩ সালে রনি তালুকদার একমাত্র উল্লেখযোগ্য ওপেনার ছিলেন, যিনি ৯ ইনিংসে ১৪১.৯৫ স্ট্রাইক রেট তৈরি করেছেন, তবে তাকে বেশি সুযোগ দেওয়া হয়নি। বর্তমান ওপেনারদের মধ্যে তানজিদ হাসান ও পারভেজ হোসেন ইমন লিটনের সাথে যুক্ত হয়েছেন, কিন্তু লিটনও ভারত সফরে সমস্যায় রয়েছেন। Interestingly, তামিম এখনও দেশের একমাত্র সফল ওপেনার, শেষ BPL-এ সর্বাধিক রান সংগ্রহ করেছেন এবং ফরচুন বরিশালকে তাদের প্রথম শিরোপা এনে দিয়েছেন।

হৃদয় মুশফিকের জায়গায়

মুশফিকুর রহিম যখন T20 থেকে অবসর নিয়েছিলেন, তখন তৌহিদ হৃদয় দলের মধ্যে একটি শক্তিশালী ইনিংস খেলেছিলেন। তিনি একটি সফল BPL কাটান এবং নং ৪-এ ব্যাটিং করে দ্রুত রান সংগ্রহ করেন, যা মুশফিকের পছন্দসই পজিশন ছিল। এটি দুই ব্যাটারের মধ্যে আদর্শ স্থানান্তর ছিল, কিন্তু বাংলাদেশ দলের ম্যানেজমেন্ট হৃদয়কে ODI দলের মধ্যে এত বেশি পরিবর্তন করেছে যে তিনি তার T20 ফর্ম হারাতে পারেন।

হৃদয়ের শট-নির্মাণ প্রমাণ করে যে যদি তাকে মিডল অর্ডারে নিজস্ব স্থান দেওয়া হয়—আদর্শভাবে নং ৪—তিনি একটি অস্থির ব্যাটিং অর্ডারে স্থিতিশীলতা যোগ করতে পারেন এবং ইনিংসকে গভীরতেও নিয়ে যেতে পারেন। মুশফিকের জন্য T20-তে এই ভূমিকা বুঝতে বছর লেগেছিল, হৃদয় হয়তো ততদিন অপেক্ষা করতে হবে না, তবে দলের ম্যানেজমেন্টকে সঠিক পরিকল্পনা করতে হবে।

মাশরাফির পরিবর্তন

বাংলাদেশের ফাস্ট বোলাররা গত তিন বছরে ম্যাচ বিজেতা হয়ে উঠেছে। তারা তিনটি ফরম্যাটে ভালোভাবে মানিয়ে নিয়েছে, এবং মুস্তাফিজুর রহমান তাদের সেরা T20 বোলার হিসাবে বিবেচিত। টাসকিন আহমেদও দ্রুত উন্নতি করেছে, আর তানজিম হাসান বিশেষত সহায়ক অবস্থায় চমৎকার তৃতীয় পেসার হিসেবে কাজ করেছে।

তাহলে বাংলাদেশ মাশরাফির পরিবর্তে ফাস্ট বোলার হিসেবে সফল হয়েছে—যিনি সাত বছর আগে T20 থেকে অবসর নিয়েছিলেন। তবে তারা মাশরাফির মতো ভালো একজন অধিনায়ক খুঁজে পায়নি। নাজমুল হোসেন শান্ত T20-তে সমস্যা সম্মুখীন হচ্ছেন। অধিনায়কত্ব ভাগ করা একটি সম্ভাব্য বিকল্প মনে হচ্ছে, কিন্তু তাদের একজন এমন ব্যক্তির প্রয়োজন, যিনি ড্রেসিং রুমের সম্পূর্ণ সম্মান অর্জন করতে পারবেন। যদি তারা সেই ব্যক্তিকে খুঁজে পায়, তবে সম্ভবত তারা শান্তকে তার সেরা ফর্মে ফিরিয়ে আনতে পারবে।

সামনের চ্যালেঞ্জ

বাংলাদেশের জন্য সামনে রয়েছে অনেক চ্যালেঞ্জ। নতুন খেলোয়াড়দেরকে দ্রুত গড়ে তোলা, অভিজ্ঞতার অভাব পূরণ করা এবং বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া—এই সবকিছুই তাদের জন্য জরুরি। নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড়দের সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের ক্রিকেট উন্নতির দিকে যেতে পারে। সেই সঙ্গে, প্রশাসনিক স্তরে শক্তিশালী সিদ্ধান্ত গ্রহণও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশের ক্রিকেটে এটি একটি নতুন অধ্যায় এবং ভবিষ্যৎ নির্ধারণে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ক্রিকেটের দুনিয়ায় প্রতিযোগিতা ক্রমাগত বাড়ছে এবং বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে টিকে থাকার জন্য নিজেদের নতুন করে তৈরি করতে হবে।

আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

ক্রিকেট

হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শেষ হল বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ নির্ধারণ ম্যাচ, দেখে নিন ফলাফল

হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শেষ হল বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ নির্ধারণ ম্যাচ, দেখে নিন ফলাফল

৬ বছর পর ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় ছিনিয়ে এনেছে বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ের চেয়ে এই ম্যাচে ...

নাহিদ রানাকে নিয়ে অবিশ্বাস্য মন্তব্য করলেন সাবেক গতিতারকা

নাহিদ রানাকে নিয়ে অবিশ্বাস্য মন্তব্য করলেন সাবেক গতিতারকা

বাংলাদেশ ক্রিকেটে গতিময় বোলারের অভাব দীর্ঘদিনের। তবে তরুণ পেসার নাহিদ রানা তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুতেই ...

ফুটবল

নতুন চমক নিয়ে ২০৩৪ বিশ্বকাপের নাম ঘোষণা করলো ফিফা

নতুন চমক নিয়ে ২০৩৪ বিশ্বকাপের নাম ঘোষণা করলো ফিফা

আগেই বেশ কিছুটা নিশ্চিত ছিল যে, ২০৩৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপের আয়োজক হবে সৌদি আরব। এবার ...

মুখোমুখি লড়াইয়ে নামবেন পুরোনো ‘শ'ত্রু’ নেইমার-এমবাপে

মুখোমুখি লড়াইয়ে নামবেন পুরোনো ‘শ'ত্রু’ নেইমার-এমবাপে

২০১৭ সালে বার্সেলোনা ছাড়ার পর নেইমার জুনিয়র রেকর্ড ২২২ মিলিয়ন ইউরোতে পিএসজিতে যোগ দেন। একই ...