নিজের বক্তব্যই যেভাবে পতন হলো শেখ হাসিনার

নিজের দেওয়া এক বক্তব্যই কাল হল শেখ হাসিনার। বক্তব্যের জেরেই বাড়লো আন্দোলনের গতি। সেই গতিতে সামনেই দাঁড়াতে পারলেন না তিনি। ছাড়তে হলো ক্ষমতা।
প্রথমে ছাত্রলীগ ও ১৪ দলের সমর্থকরা আন্দোলন প্রতিহত করতে নামে। পরে পুলিশ, সীমান্তরক্ষী ও সেনাবাহিনী নামিয়ে দেওয়া হয়। ৩০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়।
সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে বিক্ষোভের মধ্যে সম্প্রতি পদত্যাগ করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৪ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, মুক্তিযোদ্ধার বংশধররা কোটা পাবে না, তবে রাজাকারদের বংশধররা কি পাবে?
কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা হতবাক ও অপমানিত হয়ে স্লোগান দিয়ে জবাব দেয়।
এদিন রাত ১০টার পর তারা প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকে এবং বিক্ষোভ শুরু করে। পরে বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত বিভিন্ন হল থেকে মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু মূর্তির সামনে জড়ো হয়।
কোটার বিরোধিতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বিরোধিতায় তারা টিএসসি ও এর আশপাশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। মাঝেমধ্যেই স্লোগানে উচ্চকিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। ছাত্রদের সঙ্গে ছাত্রীরাও বিভিন্ন হল থেকে বেরিয়ে যোগ দেন মধ্যরাতের এ বিক্ষোভে।
শিক্ষার্থীদের একটি অংশ মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়েও অবস্থান নেন। ঘণ্টা দেড়েক অবস্থান করে রাত ১টার পর ফিরে যেতে দেখা যায় তাদের।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘তুমি নও, আমি নই, রাজাকার, রাজাকার’, ‘লাখো শহীদের রক্তে কেনা, দেশটা কারও বাপের না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। তাদের ক্ষোভ কোটা আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে ঘিরে।
তবে পরদিন সকালে ওবায়দুল কাদের এক বক্তব্যে বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঔদ্ধত্বের জবাব দেবে ছাত্রলীগ’। সেদিনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়। এর প্রতিবাদে পরদিন ১৬ জুলাই সারা দেশের শিক্ষাঙ্গনে বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়। সেদিন রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গুলিতে আবু সাঈদ নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়।
১৭ জুলাই জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তার বিশ্বাস শিক্ষার্থীরা আদালতে ন্যায়বিচার পাবে।
তবে পরের দিন কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির ডাক আসে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে। সেদিন ঢাকার বাড্ডা ও উত্তরায় সংঘাতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর পরিস্থিতির অবনতি ঘটে।
দুপুরের পর রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা হতে থাকে। পরের তিন চার দিন ধরে চলে সংঘর্ষ। সরকারি হিসেবে নিহতের সংখ্যা ১৫০ জন হলেও বেসরকারি হিসেবে এ সংখ্যা ২৫০ এরও বেশি। কারফিউ জারি করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি।
আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়। সরকার পতনের দাবিও সামনে আসে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেসময় আলোচনার জন্য ডাকলেও শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করেন।
শনিবার (৩ আগস্ট) থেকে পরিস্থিতি আবারও উত্তপ্ত হতে শুরু করে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেন। জনসমুদ্রে পরিণত হয় এ বিক্ষোভ সমাবেশ।
এদিন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শহীদ মিনারে সমবেত ছাত্র-জনতার উদ্দেশে বক্তব্য দেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রিসভাকে পদত্যাগ করতে হবে।
তাদের কর্মসূচিতে রোববার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘাত, সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় বহু হতাহতের খবর পাওয়া যায়।
‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির তারিখ পরিবর্তন করে মঙ্গলবারের পরিবর্তে সোমবার (৫ আগস্ট) পালনের ঘোষণা দেয় তারা। এতে সারা দেশ থেকে আন্দোলনকারীদের ঢাকায় আসার আহ্বান জানানো হয়।
এসব ঘটনায় রোববার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ করা হয়। এই সিদ্ধান্ত ঢাকাসহ সব বিভাগীয় সদর, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, শিল্পাঞ্চল, জেলা ও উপজেলা সদরের জন্য কার্যকর হবে বলে জানায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে কারফিউ মানেনি শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। বেরিয়ে আসেন রাস্তায়।
এরপর দিন আজ সোমবার (৫ আগস্ট) কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে সরকার পতনের সৃষ্ট উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেশ ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুপুরে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যাওয়ার ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রবেশ করেন হাজারো ছাত্রজনতা।
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- মাগুরার আছিয়ার বোনের মুখ থেকে সত্যিটা শোনেন (ভিডিওসহ)
- ৮ বছরের শিশু ধ/র্ষণে বোনের স্বামী ও শ্বশুর আটক, বেড়িয়ে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
- ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনায় বেড়িয়ে এল চাঞ্চল্যকর সব তথ্য
- মাগুরার সেই শিশুর ডিএনএ রিপোর্ট থেকে বেড়িয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য
- ভূমিকম্পে ঢাকায় তাৎক্ষণিক ভাবে মারা যেতে পারে ২ লাখ মানুষ
- তীব্র কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টি আশঙ্কা
- মাগুরায় আলোচিত ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের শুনানি হল গভীর রাতে; রায় নিয়ে যা জানা গেল
- আছিয়ার মৃত্যুর পর চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন তার মা (ভিডিওসহ)
- মাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধ"র্ষণ হইছে যে ঘরে (ভিডিওসহ)
- আছিয়ার ধ/র্ষণ ও হত্যা মামলার এজাহারে আসামীদের ভয়াবহ লোমহর্ষক বর্ণনা
- আছিয়া নিজে বলে গেছে ধ/র্ষণ করেছে কে (ভিডিওসহ)
- আছিয়ার ধ/র্ষক দুলাভাই কে নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন তার শ্রেণী শিক্ষক মাহফুজ
- সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বিশাল বড় সুখবর
- মাগুরায় ৮ বছরের শিশুর সর্বশেষ তথ্য
- ৮ বছরের শিশুকে নিয়ে মাগুরায় আর্মি অফিসারের বক্তব্য ভাইরাল