| ঢাকা, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫, ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১

আগের আসরেও লাভ হয়নি বিপিএলে, এই আসরেও লাভ দেখতে পাচ্ছি না’

খেলাধুলা ডেস্ক . বিনোদন৬৯.কম
২০২৪ জানুয়ারি ২৫ ২০:৪৭:২৬
আগের আসরেও লাভ হয়নি বিপিএলে, এই আসরেও লাভ দেখতে পাচ্ছি না’

বিপিএলে দল গড়ার খরচ, দল গড়ার খরচ, লাভ না হলেও দল গড়ার উদ্দেশ্য, বিপিএলে টিকে থাকার চ্যালেঞ্জ নিয়ে টিবিএসের সঙ্গে কথা বলেছেন চিটাগাং চ্যালেঞ্জার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এম রিফাতুজ্জামান। , এই সিজনের লক্ষ্য এবং পরিকল্পনা। সাধারণ এবং আরও অনেক কিছু।

"আমরা বিপিএলে যে খরচের কথা বলছি, যে কাঠামো তৈরি করা হয়েছে তা ৫-২০ কোটির মধ্যে, কেউ যদি ১০-১৫ কোটির মধ্যে হয় তবে সে বিপিএল থেকে ১০ কোটি পেতে পারে। এটির একটি সুযোগ আছে। একটা সুযোগ। এটা একটা সুযোগ আছে,” চিটাগাং চ্যালেঞ্জার্স দলের মালিক কে এম রিফাতুজ্জামান বলেছিলেন।

১০ কোটি তো দূরের কথা, বিপিএলের কোনো আসরেই লাভের মুখ দেখতে পারেনি চট্টগ্রাম। এবারও কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না চট্টগ্রামের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এরপরও বিপিএলে দল গড়ার কী কারণ? আকতার ফার্নিচারের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদে থাকা রিফাতুজ্জামান জানালেন, নিজের ব্র্যান্ডের মার্কেটিংয়ের জন্য বিপিএল বড় একটা প্ল্যাটফর্ম। এই পরিকল্পনায় সফল বলেই তারা বিপিএলে দল গড়ে যাচ্ছেন।

বিপিএলে দল গড়া, দল গড়তে খরচ, লাভ না হওয়ার পরও দল গড়ে যাওয়ার উদ্দেশ্য, বিপিএলে টিকে থাকার চ্যালেঞ্জ, এবারের আসরের লক্ষ্য ও পরিকল্পনাসহ আরও অনেক বিষয় নিয়ে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেছেন রিফাতুজ্জামান। শুরুতেই দলের প্রস্তুতি নিয়ে তিনি বলেন, 'আমরা মানসিকভাবে অনেক বেশি প্রস্তুত ছিলাম। বিপিএলে যে চ্যালেঞ্জটা হয় বিদেশি খেলোয়াড় নিয়ে, যে কারণে মাঠে চারজন খেলোয়াড় খেললেও একটা দলে ১০-১৫ জন বিদেশি খেলোয়াড় থাকে।'

'কারণ একটাই, এই একই সময়ে সারা বিশ্বে অনেকগুলো ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট চলে। তাই খেলোয়াড়দের ফাঁকা পাওয়া যায় না। না থাকার কারণে কেউ আসবে, কেউ যাবে; এ কারণে অনেকগুলো খেলোয়াড় থাকতে হয়। আবার ওই খেলোয়াড়রাও পুরোপুরিভাবে সময় দিতে পারে না, এনওসি নিয়ে সমস্যা থাকে, এনওসি আসতে সময় শেষের দিকে চলে যায়। ওগুলো ছাড়া আমি মনে করি আমাদের সব ঠিকঠাক আছে।' যোগ করেন তিনি।

দলের ওপর আস্থা আছে, তবে বেশি আশা রাখছেন না রিফাতুজ্জামান, 'আসলে ক্রিকেটে অনেক ভালো দল নিয়ে আপনি আশাবাদী হতে পারেন, কিন্তু সাফল্যের হার বলতে পারবেন না শতভাগ। সময়ের সাথে সাথে ক্রিকেট আরও ভালোভাবে বুঝতে পারছি। ঠিক টিম কম্বিনেশনে যদি সেরা চেষ্টা করতে পারে, সেদিন দল ভালো করে। কারণ অনেক শক্তিশালী দলের বিপক্ষেও জিতেছি, আবার শক্তিশালী মনে করিনি এমন দলের কাছে হেরেছি। এটা অনিশ্চিত।'

আগের আসরের তুলনায় এবার দল গড়তে বেশি খরচ হয়েছে বলে জানালেন রিফাতুজ্জামান। কারণ হিসেবে একই সময়ে অনেকগুলো ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ চলার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, 'খরচ অবশ্যই বেড়েছে। এই সময়ে খেলোয়াড় সঙ্কট থাকে। অনেকগুলো ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট না থাকলে খেলোয়াড়দের অপশন কম থাকতো, আর অপশন কম থাকলে তারা সেরা রেটের জন্য চেষ্টা করতো না। কিন্তু সে সেরা প্রস্তাবটাই নেওয়ার চেষ্টা করবে। ফাঁকা কোনো সময়ে বিপিএল করা গেলে পরিকল্পনা করতে সহজ হতো, খরচ কমতো, ভালো খেলোয়াড়ও পাওয়া যেত। সাধারণত একটা দল গড়তে ১০ কোটির বেশি লাগেই।'

শিরোপ নয়, বরং ভালো ক্রিকেট খেলা লক্ষ্য থাকে চট্টগ্রামের। এবারও অভিন্ন উদ্দেশ্যে বিপিএল মিশন শুরু করেছে ৩ ম্যাচের ২টি জেতা দলছি। রিফাতুজ্জামান বলেন, 'আমরা প্রতিবারই ভালো খেলার জন্য খেলি। শিরোপার কথা চিন্তা না করে আমরা সেরা চারের লক্ষ্যে খেলি। সেরা চারে থাকার চেষ্টা থাকে। তিন-চার বছরের মধ্যে গত বছর ছাড়া আমরা প্রতিবারই সেরা চারে খেলেছি। গত বছরটাই আমাদের সবচেয়ে দুর্বল পারফরম্যান্স ছিল। তো আমাদের লক্ষ্য থাকে সেরা চারে খেলবো, ওখানে সেরাটা দিতে পারলেই ফাইনাল।'

দুই বছর আগে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রিফাতুজ্জামান বলেছিলেন, বিপিএল থেকে ১০ কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। কিন্তু বাস্তবতার সঙ্গে মেলেনি, বিপিএল থেকে এখনও লাভের মুখ দেখতে পারেনি তারা। এবারও আশা দেখছেন না চট্টগ্রামের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, 'এখন পর্যন্ত কোনো বছরেই লাভ হয়নি। এই বছরও কোনো লাভ দেখতে পাচ্ছি না। আমার কাছে এখনও মনে হয় বিপিএলকে লাভজনক করা যায়। কিন্তু এর জন্য নিয়ম-কানুনে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি যেভাবে লাভ করছে, তেমন একটা মডেল দাঁড় করানো যায়, অবশ্যই লাভজনক হয়ে যাবে।'

লাভ না হলেও নিজের ব্যবসার মার্কেটিংয়ের জন্য বিপিএলকে বড় প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করতে পারছেন বলে জানান তিনি। এটাকে যথেষ্ট মনে হয় রিফাতুজ্জামানের কাছে, 'আমি এখনও মনে করি, মানুষের কাছে পৌঁছাতে ক্রিকেট একটা বড় মিডিয়া। কারণ আপনি ক্রীড়া দিয়ে অনেক মানুষের কাছে যেতে পারেন। আপনার ব্র্যান্ডকে আপনি সারা দেশের গণমানুষের কাছে নিয়ে যেতে পারেন।'

'ওইভাবে চিন্তা করলে বিপিএল বা ক্রিকেটের অঙ্গনটা অনেক বড়। আমি মনে করি ক্রিকেটের সঙ্গে ট্যাগ হয়ে যেকোনো ব্র্যান্ড অনেক বেশি মাইলেজ নিতে পারে। না হলে এখানে আমার থাকার বিশেষ কোনো কারণ নেই। কারণ, শুধু প্যাশন থেকে এতোগুলো টাকা তো খরচ করা সহজ ব্যাপার নয়। আমি দেখতে পাচ্ছি রিচ হচ্ছে, ইতিবাচক মনোভাব মানুষের মুখে মুখে চলে যায়।' বলেন তিনি।

তাই এখন পর্যন্ত শিরোপা জিততে না পারলেও নিজেদের সফল বলছেন রিফাতুজ্জামান, 'আমার কাছে মনে হয়, যে উদ্দেশ্যে এসেছিলাম, ব্র্যান্ডের জায়গা থেকে বলতে পারবো আমাদের যথেষ্ট রিচ হয়েছে। অন্য দলের তুলনায় আমাদের স্যোশাল হ্যান্ডল যদি দেখেন, সারা বছর কন্টেন্ট থাকে, সারা বছর রিচ থাকে। আমরা একটা ভালো সাড়া পাই। তবে তৃপ্তি নেই এই কারণে যে, একবারও কাপ নিতে পারিনি। ওই জায়গা থেকে তৃপ্ত নই। কারণ কাপের তৃপ্তিটা আলাদা।'

রিফাতুজ্জামান মনে করেন, ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট হিসেবে ক্রমেই গুছিয়ে উঠছে বিপিএল, 'আমার কাছে মনে হচ্ছে দিন দিন একটু করে গুছিয়ে আসছে। মাঝখানে করোনার কাছে মনে হচ্ছিল অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে, তাড়াহুড়োর মধ্য দিয়ে হচ্ছিল, শেষ সময়ের সিদ্ধান্তে। এ বছর আমরা সবকিছু আগে আগে করেছি। যে কারণে আমরা অনেক খেলোয়াড়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এই সময়ে বেশি টুর্নামেন্ট থাকায় ভালো খেলোয়াড়দের দিয়ে পুরো টুর্নামেন্ট খেলানো খুব কঠিন হয়ে যায়।'

বিপিএলের প্রাইজমানি, ডিআরএস, আম্পায়ারিং ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন রিফাতুজ্জামান। তার ভাষায়, 'এগুলো আসলে নিয়মের মধ্যে চলে আসে। যেগুলো নিয়ে কাজ করলে পুরো বিপিএল লাভজনক হতে পারে। বিপিএল আমাদের দেশে সবচেয়ে বড় ক্রিকেটিং প্ল্যাটফর্ম, এটা আরও লাভজনক করার জন্য এসব করা উচিত। টাইমফ্রেমটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ, আপনি আরও বেশি আকর্ষণীয় করতে পারবেন যদি কিনা সব দলে ব্র্যান্ডেড খেলোয়াড় থাকে। সবাই তাদের জন্য খেলা দেখবে।'

'ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে কীভাবে আরও লাভজনক করা যায়, সেগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে। অন্যান্য দেশ কীভাবে সফল হচ্ছে, দিনে দিনে উন্নতি করছে, সেসব নিয়ে কাজ করা উচিত। অনেক জায়গায় উন্নতি করার সুযোগ আছে। মার্কেটে টিকে থাকতে আপনাকে উন্নতি করতেই হবে। এক জায়গায় থাকলে হবে না। অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি দেখেন, পাঁচ বছর আগে কেমন ছিল আর এখন কেমন; উন্নতি হয়েছে। আমাদেরও সেই প্রক্রিয়ায় থাকতে হবে, সব সময়ই উন্নতিতে থাকতে হবে।' যোগ করেন তিনি।

বিপিএলে সীমাবদ্ধ না থেকে প্রিমিয়ার লিগসহ বাংলাদেশের অন্যান্য ক্রিকেটে কাজ করার ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন রিফাতুজ্জামান। কিন্তু বিভিন্ন কারণে সেটা সম্ভব হচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, 'গত দুই বছরে পুরো আর্থিক অবস্থা ভিন্ন হয়ে গেছে। শুধু ক্রিকেট নয়, এই মুহূর্তে আমরা কোনো কিছুতেই আগাচ্ছি না, তেমন পরিকল্পনা নেই। এক-দেড় বছরের কথাই যদি বলেন, ডলার রেট পরিবর্তন হয়ে গেল, নিয়মিতভাবে বেড়ে গেছে। যা ইমপোর্ট হতো, সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। বড় একটা পরিবর্তন এসেছে। লাভের অংশ অনেক কমে গেছে। ডলার সঙ্কটের কারণে ইমপোর্টও কমে গেছে। ইমপোর্ট কমার কারণে প্রোডাক্টিভিটিও কমেছে। একটা আরেকটার সঙ্গে সংযুক্ত, এটার মধ্যে থাকাটাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে যাচ্ছে। আরও অনেক কিছু নিয়ে পরিকল্পনা করা তো আরও পরের কথা।'

আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ

ক্রিকেট

বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক লিটন দাস

বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক লিটন দাস

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের তিন ফরম্যাটের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে গত ...

হঠাৎ করে মেহেদী হাসান মিরাজের নতুন যে নাম দিল আইসিসি

হঠাৎ করে মেহেদী হাসান মিরাজের নতুন যে নাম দিল আইসিসি

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) হল বিশ্বব্যাপী ক্রিকেটের কর্মকাণ্ড পরিচালনাকারী সর্বোচ্চ সংস্থা। তাদের প্রকাশিত তথ্য সাধারণত ...

ফুটবল

২৫ মার্চ ভারতের বিপক্ষে খেলতে হামজার বাংলাদেশে আগমনের সময় চূড়ান্ত

২৫ মার্চ ভারতের বিপক্ষে খেলতে হামজার বাংলাদেশে আগমনের সময় চূড়ান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ফুটবলার হামজা দেওয়ান চৌধুরি ২৫ মার্চ ভারতের বিপক্ষে আসন্ন ম্যাচের ...

বাংলাদেশ ম্যাচের আগে অবসর ভেঙে ফিরছেন ভারতের তারকা খেলোয়াড়

বাংলাদেশ ম্যাচের আগে অবসর ভেঙে ফিরছেন ভারতের তারকা খেলোয়াড়

নিজস্ব প্রতিবেদক: আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নেওয়ার মাত্র ৮ মাসের মধ্যে আবারও ভারতের জাতীয় দলের ...