অবিশ্বাস্য কামব্যাকের গল্প লিখলো অস্ট্রেলিয়া

এভাবে খেলা জেতা যায়! ৯১ রানে ৭ উইকেট। আফগান বোলাররা খুবই অনুপ্রাণিত। নূর আহমেদ, রশিদ খান, নবীন-উল-হকের ঝড়ের আগে খড়ের মতো উড়ে গেল ক্রিকেটের পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়া।
গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও সেই স্রোতে "ভাসিয়েছিলেন"। ফাইন লেগে ক্যাচ নেন নূর আহমেদ। বল সরাসরি মুজিব-উর রহমানের কাছে যায়। মুজিব তার হাতের তালু দিয়ে বল ফেলে দেন। খপ্পর হারিয়ে গেল।
সেই একটি ক্যাচ মিস করেই ম্যাচ হারে আফগানিস্তান। নিশ্চিত জয় থেকে খেলা দূরে নিক্ষেপ. তখন ম্যাক্সওয়েলের ছিল ৩৩ পয়েন্ট। অস্ট্রেলিয়ার রান ছিল ১১২। মুজিব বল দখল করলে ম্যাচের বয়স কিছুটা বাড়তে পারত।
কিন্তু তারপর থেকেই ইতিহাস গড়লেন ম্যাক্সওয়েল। তিনি সেই "জীবন" পেয়েছিলেন, তারপর এটি সম্পূর্ণরূপে ব্যবহার করেছিলেন। অবিশ্বাস্য এক ইনিংস দিয়েছেন তিনি। আফগান বোলিংকে নাড়া দিয়েছিলেন তিনি। তিনি আহত হয়ে শেষ পর্যন্ত। তিনি প্রতিযোগিতায় একক বা দ্বৈত মারছিলেন না। শুধু বাউন্ডারি মেরে দলকে জয়ের পথে নিয়ে যান ম্যাক্সওয়েল। এটি অস্ট্রেলিয়াকে ৩ উইকেটের অবিশ্বাস্য জয় এনে দেয়।
ম্যাক্সওয়েল ১২৮ বলে ২১ বাউন্ডারি ও ১০ ছক্কায় ২০১ রানের ইনিংস দেন। প্যাট কামিন্সের সঙ্গে অষ্টম উইকেট জুটিতে ২০২ রান করেন তিনি। কামিন্স ৬৮ বলে ১২ রান করে অপরাজিত থাকেন। ম্যাক্সওয়েলের লড়াইয়ে কামিন্সের অবদানও কম নয়। তিনি যে জুটি দিয়েছেন তা ক্রিকেটের ইতিহাসে বিরল হবে।
ম্যাচটিকে কি ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা বলা যায়? কিছু বিবাদ হতে পারে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে যাওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ানদের একক প্রচেষ্টায় জয়ের রেকর্ড আছে কিনা তা বিতর্কিত। পরিসংখ্যান বোঝার বিষয়। আপাতত গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বীরত্বপূর্ণ ইনিংসের প্রশংসা করা উচিত।
বীরত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে অস্ট্রেলিয়াকে সেমিফাইনালে নিয়ে যান এই ব্যাটসম্যান। ইনিংস শেষে ২০১ রানে অপরাজিত থাকেন ম্যাক্সওয়েল। প্যাট কামিন্স তার যোগ্য সমর্থনে ৬৮ বলে ১২ রানে অপরাজিত থাকেন।
তবে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুজিব-উর রহমান ২২ তম ওভারে স্পিনার নূর আহমেদের পঞ্চম বলে ফাইন লেগে সহজ ক্যাচ মিস করেন। বল চলে গেল সোজা হাতে। কিন্তু মুজিবও হাতের তালু দিয়ে বল ফেলে দেন।
সেই ‘জীবন’ বদলে দিল ম্যাচের পুরো চিত্র। এখন শুধু ম্যাক্সওয়েল অস্ট্রেলিয়াকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন জয়ের বন্দরে। ৯১ রানে সপ্তম উইকেট হারানোর পর অস্ট্রেলিয়া যেখানে নিশ্চিত পরাজয়ের স্বাদ পেতে বসেছিল, সেখানে তারা এখন শুধু ম্যাক্সওয়েলের ব্যাট হাতে ম্যাচ জেতার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আফগান আক্রমণের মুখে ওয়ার্নার, ট্র্যাভিস হেড, লাবুসচেন, জোস ইংলিশ এবং স্টয়নিসের মতো ব্যাটসম্যানরা যখন একের পর এক পিছু হটলেন, তখন জোয়ারের বিরুদ্ধে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল একাই পড়ে গেলেন। তিনি একাই আফগান বোলারদের শাসন করেন। ইতিমধ্যেই সেঞ্চুরির কাছাকাছি পৌঁছেছেন তিনি। ৭৬ বলে ১০ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায় সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। এর আগে ৫১ বলে হাফ সেঞ্চুরি ছুঁয়েছিলেন তিনি।
২৯২ রানের বিশাল টার্গেটে বোলিং করার পর অস্ট্রেলিয়ার বোলিংও ধরা দেয় আফগানিস্তান। জয়ের জন্য ব্যাট করতে নেমে ৪৯ রানের মধ্যেই অস্ট্রেলিয়া তাদের সেরা চার ব্যাটসম্যানকে হারিয়েছে। নবম ওভারের শুরুতে আজমতুল্লাহ ওমরজাই পরপর দুই বলে ডেভিড ওয়ার্নার ও জস ইঙ্গলিসকে ফিরিয়ে ম্যাচের সিলমোহর নিশ্চিত করেন।
মুম্বাইর ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে জয়ের জন্য ২৯২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আফগান বোলিংয়ের সামনে হাসফাঁস করতে শুরু করে অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটাররা। দ্বিতীয় ওভারেই অস্ট্রেলিয়ার ওপেনিং জুটিতে ভাঙন ধরান আফগান বোলার নাভিন-উল হক।
দ্বিতীয় ওভারেই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার ট্রাভিস হেডকে ফিরিয়ে দেন আফগান এই পেসার। ২ বলে কোনো রানই করতে পারেননি হেড। এরপর অবশ্য মিচেল মার্শ এবং ডেভিড ওয়ার্নার মিলে চেষ্টা করেন জুটি গড়ার।
কিন্তু ৪৩ রানের মাথায় সেই নাভিন-উল হকের বলে এলবিডব্লিউর শিকার হন মিচেল মার্শ। ১১ বলে ২৪ রান করে আউট হন তিনি। ওয়ার্নার আর মার্নাস লাবুশেন মিলে চেষ্টা করেন জুটি গড়ার। কিন্তু ৯ম ওভারের প্রথম ও দ্বিতীয় বলে ওয়ার্নার এবং ইংলিশকে আউট করেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই।
মার্নাস লাবুশেন রানআউট হয়ে যান ২৮ বলে ১৪ রান করে। মার্কাস স্টয়নিজ রশিদ খানের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে যান ৭ বলে মাত্র ৬ রান করে। মিচেল স্টার্ক ৭ বলে ৩ রান করে কট বিহাইন্ড হয়ে যান রশিদ খানের বলে। যদিও পরে রিপ্লেতে দেখা যায়, স্টার্কের ব্যাটেই বল লাগেনি। স্টার্ক রিভিউ নিলে হয়তো বেঁচে যেতেন।
কিন্তু ম্যাক্সওয়েল ও কামিন্সের ১৭০ বলে ২০২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিই তাদের সেমিফাইনালে তুলে দিল। আফগানদের হয়ে নাভিন-উল-হক, ওমরজাই ও রশিদ খান দুটি করে উইকেট পান।
এর আগে দিল্লির ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্যাট কামিন্সদের সামনে ২৯২ বিশাল লক্ষ্য দাঁড় করিয়ে দিয়েছে ইবরাহিম জাদরান, হাশমতউল্লাহ শহিদি, রশিদ খানরা।
অসাধারণ এক সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন আফগান ব্যাটার ইবরাহিম জাদরান। ১৩১ বল খেলে শতরানের মাইলফলকে পৌঁছান তিনি। ৭টি মেরেছেরন বাউন্ডারির মার। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ১৪৩ বলে ১২৯ রানে। শেষ মুহূর্তে রশিদ খান ১৮ বল খেলে তোলেন ৩৫ রান।
এই ম্যাচই দুই দলের সামনে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করার দারুণ সুযোগ। অস্ট্রেলিয়া ৫ ম্যাচ জিতে ১০ পয়েন্ট নিয়ে এগিয়েই রয়েছে বলা যায়। অন্যদিকে চার ম্যাচ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে আফগানরাও রয়েছে সেমির দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে।
এমন এক সমীকরণের ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন আফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদি। ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ এবং ইবরাহিম জাদরান মিলে ৩৮ রানের জুটি গড়েন। ভালো সূচনা এনে দেয়ার পর অষ্টম ওভারে হ্যাজলউডের বলে ২১ রান করে আউট হয়ে যান রহমানুল্লাহ গুরবাজ।
এরপর রহমত শাহ এবং ইবরাহিম জাদরান মিলে জুটি গড়েন। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল যখন জুটি ভাঙেন তখন, এ দু’জন আফগানিস্তানকে পৌঁছে দেন ১২১ রানে। ৮৩ রানের জুটি গড়েন তারা। ৪৪ বলে ৩০ রান করে আউট হন রহমত শাহ। ৪৩ বলে ২৬ রান করে বোল্ড হয়ে যান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদি।
১৮ বলে ২২ রান করে আউট হন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। ১০ বলে ১২ রান করে আউট হন মোহাম্মদ নবি। একপ্রান্তে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়লেও অন্যপ্রান্ত আগলে খেলে যেতে থাকেন ইবরাহিম জাদরান। যে কারণে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি তুলে নিতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি ইবরাহিমকে।
শেষ দিকে রশিদ খান ঝড় তুললে আফগানদের স্কোর তিনশ’র কাছাকাছি পৌঁছে যায়। শেষ ৫ ওভারেই আফগানরা স্কোরবোর্ডে রান যোগ করে ৬৪টি। উইকেট হারিয়েছিলো মাত্র ১টি। শেষ ২ ওভারে রান তোলে ৩০ রান। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে জস হ্যাজলউড ২টি এবং ১টি করে উইকেট নেন মিচেল স্টার্ক, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এবং অ্যাডাম জাম্পা।
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- মাগুরার আছিয়ার বোনের মুখ থেকে সত্যিটা শোনেন (ভিডিওসহ)
- ৮ বছরের শিশু ধ/র্ষণে বোনের স্বামী ও শ্বশুর আটক, বেড়িয়ে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
- ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনায় বেড়িয়ে এল চাঞ্চল্যকর সব তথ্য
- মাগুরার সেই শিশুর ডিএনএ রিপোর্ট থেকে বেড়িয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য
- ভূমিকম্পে ঢাকায় তাৎক্ষণিক ভাবে মারা যেতে পারে ২ লাখ মানুষ
- তীব্র কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টি আশঙ্কা
- মাগুরায় আলোচিত ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের শুনানি হল গভীর রাতে; রায় নিয়ে যা জানা গেল
- আছিয়ার মৃত্যুর পর চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন তার মা (ভিডিওসহ)
- মাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধ"র্ষণ হইছে যে ঘরে (ভিডিওসহ)
- আছিয়ার ধ/র্ষণ ও হত্যা মামলার এজাহারে আসামীদের ভয়াবহ লোমহর্ষক বর্ণনা
- আছিয়া নিজে বলে গেছে ধ/র্ষণ করেছে কে (ভিডিওসহ)
- আছিয়ার ধ/র্ষক দুলাভাই কে নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন তার শ্রেণী শিক্ষক মাহফুজ
- সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বিশাল বড় সুখবর
- মাগুরায় ৮ বছরের শিশুর সর্বশেষ তথ্য
- ৮ বছরের শিশুকে নিয়ে মাগুরায় আর্মি অফিসারের বক্তব্য ভাইরাল