চলমান ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন নিয়ে ভারতে গেছে বাংলাদেশ দল। টাইগাররা সেই মিশনের প্রথম খেলায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে বড় জয় দিয়ে শুরু করলেও পরের তিন ম্যাচে হেরেছে। কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনে অনেক দেরি করছে সাকিব বাহিনী। তাই সেমিফাইনালের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখার লড়াইয়ে আজ দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ।

আজ মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে এই বছরের বিশ্বকাপের ২৩তম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হয় টাইগাররা। ম্যাচটি শুরু হয় বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটায়। এই ম্যাচে নিজেদের দ্বিতীয় জয়ের লক্ষ্য নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মাঠে নামে বাংলাদেশ। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন দক্ষিণ আফ্রিকা দলের অধিনায়ক।

বিশ্বকাপের মতো আসরে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সাকিব-মোস্তাফিজের পারফরম্যান্স ছিল দুর্দান্ত বোলিংয়ের প্রদর্শন। দক্ষিণ আফ্রিকার রান বইয়ে ৩৮২ রান দেখলে হতবাক মনে হতে পারে, তবে রানের কথা না ভেবে একটু গভীরভাবে চিন্তা করলেই বুঝতে পারবেন এই ইনিংস থেকে বাংলাদেশের লাভ কম নয়। কৃতিত্বের রেকর্ডে কী কী গৌরবময় অধ্যায় যুক্ত হয়েছে? বাংলাদেশের ইনিংস শুরুর আগে এক নজরে দেখে নেওয়া যাক- বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের চেয়ে কম পয়েন্ট স্কোর করেছে

কয়েকদিন আগে এই পিচে ইংল্যান্ডের বোলাররা ৩৯৯ রান করেছিলেন। বাংলাদেশ আজ ১৭ রান কম করতে পেরেছে। এটা নিঃসন্দেহে বলা যায় বোলিং শক্তির দিক থেকে বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের চেয়ে বাংলাদেশ ভালো।

সেঞ্চুরি ছাড়া ক্লাস, ডাবল সেঞ্চুরি নেই ডি ককের

ওয়াংখেড়ের মতো ব্যাটিং স্বর্গে, তিনি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন: হেনরিখ ক্লাসেন। ১৯৫০ এর দশকটি রিজা হেন্ড্রিক্স, মার্কো জানসেন এবং রাসি ভন ডের ডুসেন দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছিল। আজ বাংলাদেশের বিপক্ষে একই পিচে সেই ‘এক নম্বর’ সেঞ্চুরির খাতায় জ্বলে উঠেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার সুস্বাস্থ্যের সুবাদে- কুইন্টন ডি কক। পঞ্চাশ? ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে ওয়ান ডাউন: শুধু ক্লাসেন এবং এইডেন মার্করাম। বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের চেয়ে ভালো বলা যেতে পারে কারণ তারা অন্তত একটি ফিফটি হজম করেছে।

ডি কক ডাবল সেঞ্চুরি পাননি, ২০০ রানের মধ্যে ২৬ রান করে অবসর নেন। ক্লাসেন অবশ্য সেঞ্চুরি ছাড়াই রয়ে গেছেন। তিনি ৯০ পয়েন্ট স্কোর করেছেন। এই দুজনকে যথাক্রমে ডাবল সেঞ্চুরি ও সেঞ্চুরি করতে না দেওয়ায় বাংলাদেশের বোলারদের সাধুবাদ দেওয়া যায়! হাসতে শুরু করার আগে শ্রীলঙ্কার কথা ভাবুন। লঙ্কান বোলারদের বিপক্ষে তিনটি সেঞ্চুরি করেন দক্ষিণ আফ্রিকানরা। বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্রুততম সেঞ্চুরি করলেন এইডেন মার্করাম। বাংলাদেশ লঙ্কার চেয়ে দুই কম সেঞ্চুরি করতে পেরেছে। দ্রুততম সেঞ্চুরি? এটাও হয়নি। নিঃসন্দেহে বলা যায় লঙ্কান বোলারদের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়েই আজ মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ।

বিশ্বকাপে বাজে বোলিং হয়নি, এমনকি ওয়ানডে রেকর্ডও 'অক্ষত'

বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ বোলিং করার রেকর্ড রশিদ খানের। গত বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ ওভারে ১১০ রান করেছিলেন আফগান স্পিনার। বাংলাদেশি কোনো বোলারকে আজ 'সেঞ্চুরি' করতে হয়নি। দুই অস্ট্রেলিয়ান মিক লুইস এবং অ্যাডাম জাম্পাও ওয়ানডে ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ বোলিংয়ের রেকর্ডটি ধরে রেখেছেন। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা দেশের দুই বোলারের চেয়ে কম বোলিং করায় কিছুটা কৃতিত্ব নিতে পারে বাংলাদেশ।

পরের ম্যাচে বোলিং...

আজ বাংলাদেশের হয়ে সাত-সাতজন বোলার হাত ঘুরেছেন। এই ভিন্ন বোলিং শক্তি বাংলাদেশকে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য দল থেকে আলাদা করে দিতে পারে এবং হতে পারে বাংলাদেশের তুরুপের তাস। এতগুলো বোলিং অপশন থাকায় কে কী অবস্থায় বল করতে পারে তা নিয়ে ভাবার প্রচুর সুযোগ থাকবে বাংলাদেশের।