বিপিএলকে পথ দেখালো মালান
বিগ ব্যাশ তো ছিল আগে থেকেই। এখন সংযুক্ত আরব আমিরাতের আইএল টি-টোয়েন্টি ও দক্ষিণ আফ্রিকার এসএ টোয়েন্টি টুর্নামেন্টও চলবে বিপিএলের সঙ্গে প্রায় একই সময়ে। তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার এই ভীড়ে হাতে গোণা যে কয়েকটি তারার টিমটিমে আলো পেয়েছে বিপিএল, তাদের একজন মালান।
তারও অবশ্য খেলার কথা ছিল না। আরব আমিরাতের লিগে চুক্তিবদ্ধ এই ইংলিশ ব্যাটসম্যান। তবে প্রস্তাব পেয়ে দুবাইয়ে যাওয়ার আগে দুটি ম্যাচ খেলে যাচ্ছেন তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে।
এই দুই-তিন ম্যাচের জন্য ভ্রমণ, প্রস্তুতির ঝক্কি নিতে চান না অনেকেই। এবার তবু মালান, মোহাম্মদ নবি, সিকান্দার রাজাসহ বেশ কজন ক্রিকেটার এসেছেন এরকম স্বল্প সময়ের জন্য। মালান কেন এই ‘ঝামেলা’ নিয়েছেন, তা শোনালেন রোববার। মিরপুর একাডেমি মাঠে কুমিল্লার অনুশীলন শেষে তিনি বললেন, এই টুর্নামেন্ট ও বাংলাদেশ ক্রিকেটের পুরনো ঋণের কথা।
“বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে আমি সবসময় উপভোগ করেছি। আমার খেলা প্রথম টুর্নামেন্টগুলোর একটি ছিল এটি (দেশের বাইরে)। এই টুর্নামেন্ট আমার ক্যারিয়ারের ভিত গড়ে দিয়েছিল। নিজের খেলা সম্পর্কে বুঝতে এটি আমাকে সহায়তা করেছিল। শুধু এই বিপিএল নয়, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগও। এই দুটি টুর্নামেন্টই আমার খেলার উন্নতি করতে সহায়তা করেছে। বাংলাদেশে আসার যে কোনো সুযোগ পেলেই তাই আমি পুরোটা লুফে নিতে চাই।”
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেপা রাখার অনেক আগে থেকেই বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে মালানের পদচারণা। ২০১৩ সালে তিনি এখানে খেলতে আসেন প্রাইম দোলেশ্বরের হয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে খেলতে। এমন বিরুদ্ধ উইকেট ও কন্ডিশনে প্রথম অভিযানেই সফল তিনি। সেবার ৮ ম্যাচ খেলে ৪০৬ রান করেন ৬৭.৬৬ গড়ে। এই সাফল্যে তাকে পরের মৌসুমেও নিয়ে আসে দোলেশ্বর। ২০১৪-১৫ মৌসুমে ১৬ ম্যাচ খেলে করেন ৪৯.৬০ গড়ে ৪৯৬ রান।
ঢাকা লিগের সাফল্য মনে রেখেই হয়তো ২০১৬-১৭ বিপিএলে মালানকে দলে নেয় বরিশাল বুলস। বিশ্ব ক্রিকেটে তখনও খুব একটা পরিচিতি নেই তার। আন্তর্জাতিক অভিষেকই যে হয়নি! বরিশালের হয়ে সেবার ৯ ম্যাচে ২ ফিফটিতে করেন ২৪০ রান।
এই বিপিএল খেলে যাওয়ার মাস ছয়েক পরই ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে অভিষেক হয়ে যায় তার। জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পর আরও দুইবার বিপিএল খেলতে আসেন তিনি। ২০১৮-১৯ আসরে খুলনা টাইটান্সের হয়ে খুব একটা ভালো করতে পারেননি। ৬ ম্যাচে ২১.৮৩ গড়ে করেন ১৪৫ রান। ২০১৯-২০ বিপিএল অবশ্য দারুণ কাটান কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের হয়ে। এবার ১১ ম্যাচে ১ সেঞ্চুরি ও ৩ ফিফটিতে করেন ১৪৫.০৯ স্ট্রাইক রেটে ৪৪৪ রান।
বিপিএলে ও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে খেলে নিজের খেলার উন্নতির কথা মালান তো বললেন আগেই। বিশেষ করে স্পিনে নিজের খেলা আরও পোক্ত করার পেছনে তিনি মূল ভূমিকা দেখেন বাংলাদেশে খেলার।
“উপমহাদেশে যত বেশি খেলা যায়, স্পিন খেলার স্কিল ততই ভালো শেখা যায়। আমি সবসময় শেখার দর্শনে প্রবলভাবে বিশ্বাসী। এই ধরনের কন্ডিশনে এলে উঁচুমানের স্পিনারদের খেলতে হয়। টি-টোয়েন্টিতেও এখানে স্পিনাররা অনেক বল করে।”
“অন্যান্য লিগে হয়তো এক দলে একজন-দুজন স্পিনার থাকে। এখানে তিন-চারজন থাকে। কন্ডিশনের দাবিও এরকম থাকে। স্পিনে আগ্রাসী ও রক্ষণাত্মক, দুই ধরনের ব্যাটিংই শেখা যায় এখানে। কারণ, কখনও কখনও এখানে কম রানের খেলা হয়। আবার বড় রানের খেলা হলে আক্রমণাত্মক খেলতেও জানতে হয়। স্পিন খেলার অনেক উপায় তাই এখানে শেখা যায়।”
২০১৬ সালের নভেম্বরে বিপিএলে প্রথম ম্যাচটি যখন খেলেন মালান, তার প্রতিপক্ষ ঢাকা ডায়নামাইটস দলে ছিলেন কুমার সাঙ্গাকারা, কাইরন পোলার্ড, ডোয়াইন ব্রাভোর মতো তারকা। ২০১৯ সালে খুলনা টাইটান্সের হয়ে আবার যখন ঢাকা ডায়নামাইটসের মুখোমুখি হন তিনি, তখন প্রতিপক্ষ হিসেবে পান পোলার্ড, সুনিল নারাইন, আন্দ্রে রাসেলদের।
এখন আর বিপিএলের সেই দিন নেই। এখনকার বাস্তবতায় যে তারকার হাট বসানো কঠিন, সেটিও তুলে ধরলেন মালান।
“বিপিএলে স্ট্যান্ডার্ড ভালো। এই টুর্নামেন্ট সত্যিই ভালো। তবে এখন অন্যান্য টুর্নামেন্ট এত আছে, বিপিএল যদি ক্রিকেটের মান দিয়ে বা অন্য কোনোভাবে ক্রিকেটাদের আকর্ষণ করতে পারে, আমার মনে হয় তারকা ক্রিকেটাররা আবার আসতে শুরু করবে।”
“আমার মনে আছে, শুরুর দিকে এখানে এসে আন্দ্রে রাসেল, শহিদ আফ্রিদি, সুনিল নারাইন, কাইরন পোলার্ডদের বিপক্ষে খেলেছি। একই দলে ছিল তারা, বিশাল ব্যাপার। অনেকটা আইপিএল দলের মতো ছিল। উঁচু মানের বিদেশি ক্রিকেটার ও মানসম্পন্ন ক্রিকেট তাই এখানে সবসময়ই ছিল। তবে এখন অন্যান্য লিগ শুরু হওয়ায় ওই ক্রিকেটারদের এখানে আনা বাংলাদেশের বোর্ড ও দলগুলোর মালিকদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।”
চ্যালেঞ্জ উতরানোর সম্ভাব্য উপায়ও দেখিয়ে দিলেন মালান। বাংলাদেশের ক্রিকেটে দীর্ঘদিনের পথচলায় এদেশের ক্রিকেট সম্পর্কে ধারণা যথেষ্টই হয়েছে তার। সম্প্রতি ইংল্যান্ডের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী ব্যাটসম্যান বললেন, বড় তারকাদের আকৃষ্ট করতে হলে টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে হবে ভালো উইকেটে।
“বিভিন্ন দেশের চ্যালেঞ্জ সবসময়ই আলাদা। ভিন্ন কন্ডিশন, ভিন্ন পিচ, ভিন্ন খেলার ধরন। এখানকার কথা বললে, চট্টগ্রামে এমন উইকেট পাওয়া যায়, ক্যারিয়ারে খেলা সেরা উইকেটগুলোর মধ্যে থাকে। মিরপুরে খেললে কখনোই বোঝা যায়, উইকেট কেমন হতে পারে। তাই মানিয়ে নেওয়া শিখতে হয়।”
“এখানে কন্ডিশন কখনও কখনও খুব কঠিন। এখানে রান করা কঠিন। চট্টগ্রামে গেলে বিশ্বের সেরা ব্যাটিং উইকেটগুলোর একটি পাওয়া যায়। খেলার মান আসলে অনেকটাই নির্ভর করে কন্ডিশনের ওপর। ধারাবাহিকভাবে যদি ভালো উইকেট দেওয়া হয়, তাহলে খেলার মানও বাড়বে, ভালো মানের ক্রিকেটারদেরও পাওয়া যাবে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মূল ব্যাপারই হরো, যতটা সম্ভব ভালো উইকেটে খেলা।”
তুমুল আলোচিত আরেক অনুসঙ্গ তো আছেই। টুর্নামেন্টের ভাবমূর্তি ও স্বচ্ছতার জন্য হলেও ভবিষ্যতে ডিআরএস রাখার পরামর্শ দিলেন ৩৫ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান।
“বেশির ভাগ টুর্নামেন্টেই তো ডিআরএস দেখতে পারলে ভালো লাগবে। আম্পায়ারের ভুলগুলো তাহলে শোধরানো যায়। ভুল সবারই হয়। আমরা ব্যাটসম্যানরা ভুল শট খেলি, বোলাররা বা ডেলিভারি করে, আম্পায়ারদেরও কঠিন দিন আসে মাঝেমধ্যে। এটা খেলারই অংশ। আমরা ক্রিকেটাররা তা মেনে নেই। তবে ডিআরএস যথাযথভাবে থাকলে তা মানবিক ভুল কমাতে সহায়তা করে।”
“এরকম একটি দারুণ টুর্নামেন্টে আপনি চাইবেন না যে ডিআরএস না থাকুক। টুর্নামেন্ট চলতে থাকলে বা সামনের বছরগুলোয় ডিআরএস আনতে পারলে আম্পায়ারিং নিয়ে দুর্ভাবনা সরে যাবে।”
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- বাংলাদেশ সীমান্তে বিমান হা'ম'লা'য় নি'হ'ত ৪০
- কমে গেল বাড়ল সিঙ্গাপুর ডলারের রেট ; ৮ জানুয়ারি ২০২৫
- বাংলাদেশ সীমান্তে সং'ঘ'র্ষ: নি*হত ১৮ জন
- হু হু করে কমে গেল সৌদি রিয়ালের দাম, দেখে নিন আজকের দাম
- আজও বাড়ল সৌদি রিয়ালের দাম, দেখে নিন আজকের দাম
- ব্রেকিং নিউজ : অবস্থা খুব খারাপ ‘কমপ্লিট শাটডাউন’
- বাড়ল সৌদি রিয়ালের দাম, দেখে নিন আজকের দাম
- বাড়ল সিঙ্গাপুর ডলারের রেট; ১৩ জানুয়ারি ২০২৫
- বাড়ল সৌদি রিয়ালের দাম, দেখে নিন আজকের দাম
- আজও বাড়ল সৌদি রিয়ালের দাম, দেখে নিন আজকের দাম
- বাড়ল মালয়েশিয়ান রিংগিতের দাম, দেখে নিন আজকের দাম
- ৩ পয়সা বাড়ল মালয়েশিয়ান রিংগিতের দাম, দেখে নিন আজকের দাম
- বাড়ল সিঙ্গাপুর ডলারের রেট, দেখে নিন আজকের দাম
- কমে গেল সৌদি রিয়ালের দাম, দেখে নিন আজকের দাম
- চরম দু:সংবাদ, ভিসা বন্ধ করল