ফিরে দেখা ২০২২,পুরো বছরটি যেমন গেল টাইগারদের
তবে মাউন্ট মঙ্গানুই মহাকাব্যের পরে অনুষ্ঠিত হওয়া দ্বিতীয় টেস্টে আবারো আগের রূপে ফেরে টাইগাররা। শেষ পর্যন্ত ইনিংস এবং ১১৭ রানের বড় ব্যবধানে ম্যাচ হারতে হয় মুমিনুল বাহিনীর। টাইগারদের পরবর্তী পরীক্ষা ছিল ঘরের মাঠে আফগানদের বিপক্ষে সিরিজ। খুব ভালোভাবে টাইগাররা এই পরীক্ষায় উতরেছে এমনটি বলা না গেলেও খুব খারাপও করেনি টাইগাররা। প্রথম ওয়ানডেতে ২১৬ রান তাড়া করতে গিয়ে ৪৮ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে টাইগাররা।
তবে তরুণ দুই তুর্কি মেহেদী হাসান মিরাজ এবং আফিফ হোসেন ধ্রুব দলের প্রয়োজনে এগিয়ে আসে। দুইজনের অনবদ্য ১৭৪ রানের পার্টনারশিপে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ব্যক্তিগত ৯৩ এবং ৮১ রানে অপরাজিত থাকেন আফিফ এবং মেহেদী। ঘরের মাটিতে আফগানদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে জয় পেলেও টি-টোয়েন্টি সিরিজ ১-১ সমতায় সমাপ্ত হয়।
আফগান পরীক্ষা উতরে ৩ ওয়ানডে এবং ২ টেস্ট খেলতে দক্ষিণ আফ্রিকা উড়াল দেয় ক্রিকেটাররা। সিরিজ শুরু হওয়ার আগে সাকিবকে নিয়ে বেশ কিছু বিতর্ক তৈরি হয়। মানসিক অবসাদের কারণ দেখিয়ে সিরিজ থেকে ছুটি নিয়েছিলেন সাকিব। পরবর্তীতে গণমাধ্যমের চাপ কিংবা বোর্ড সভাপতির অনুরোধ যে কোনো কারণেই হোক ওয়ানডে সিরিজ খেলার সিদ্ধান্ত নেন সাকিব। শেষ পর্যন্ত দেখা গেল বিতর্কিত এই সাকিবই হয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের মহানায়ক। আন্ডারডগ হিসেবে খেলতে নামা টাইগাররা দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২-১ ব্যবধানে সিরিজে পরাস্ত করে।
পুরো সিরিজ জুড়েই টাইগার ক্রিকেটারদের পারফরমেন্স ছিল এক কথায় অসাধারণ। খোদ দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্লেষকরা বলছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকান পেসারদের তুলনায় ভালো বল করেছেন তাসকিন-শরিফুলরা। ওয়ানডে সিরিজের ঠিক উল্টো চিত্রই দেখতে হলো টেস্ট সিরিজে। ওয়ানডের সেই আধিপত্য বিস্তার করা দলটিই টেস্ট ম্যাচে আফ্রিকানদের বিপক্ষে দাঁড়াতেই পারছিল না।
২-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ হেরেই সফর শেষ করে ক্রিকেটাররা। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পর শ্রীলংকা এবং উইন্ডিজের বিপক্ষে কাছাকাছি সময়ের মধ্যে চারটি টেস্ট খেলে বাংলাদেশ। প্রত্যাশিতভাবেই চারটি টেস্টেই বাজে পারফর্ম করে টাইগাররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ন্যূনতম প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করতে পারেনি টাইগাররা, আর ঘরের মাটিতে শ্রীলংকার বিপক্ষে অসহায় এক বাংলাদেশকেই দেখা গিয়েছে।
পরবর্তীতে ওয়েস্ট ইন্ডিসের বিপক্ষে টি টোয়েন্টিতেও ভালো করেনি টাইগাররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াস হওয়া দলটিই কিনা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদেরই ঘরের মাটিতে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইট ওয়াশ করে দেয়। অর্থাৎ অন্যান্য সংস্করণে যেমন দলই হোক না কেন ওয়ানডেতে বাংলাদেশ পরাক্রমশালী একদলই বটে। তবে জিম্বাবুয়ে সফরে বড় ধাক্কাই খেতে হল টাইগারদের।
ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি দুটি সিরিজেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হার দেখতে হয় দেশবাসীর। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারের বোঝা নিয়েই এশিয়া কাপে অংশগ্রহণ করতে আরব আমিরাত যায় টাইগাররা। শুধু টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করতেই যেন গিয়েছিল টিম বাংলাদেশ। নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচ হেরে এলিমিনেট হয়ে এয়ারপোর্টের পথ ধরতে হয় ক্রিকেটারদের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে লজ্জার সিরিজ হার এবং পরবর্তীতে এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়, বছরের সবচেয়ে বাজে সময় পার করছিল টাইগাররা।
এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্ব পেরোতে না পারায় বিশ্বকাপ সামনে রেখে যথেষ্ট ম্যাচ প্র্যাকটিস হয়নি টাইগারদের। ফলে আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজ আয়োজনের উদ্যোগ নেয় বিসিবি। দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে আরব আমিরাতকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে নিজেদের হারানো আত্মবিশ্বাস ফেরানোর চেষ্টা করে টাইগাররা।
বিশ্বকাপকে সামনে রেখে নিউজিল্যান্ড পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে নিয়ে আয়োজিত হওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজের সব ম্যাচই হারে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে এত বাজে সময় কাটানো দলটির বিশ্বকাপ অভিযান নিয়ে খুব বেশি আশাবাদী ছিল না তেমন কেউই। তবে নিজেদের ফর্ম এবং তৎকালীন পরিস্থিতি অনুযায়ী ভালো পারফর্ম করেছিল ক্রিকেটাররা। নিজেদের তুলনায় কম শক্তিশালী দলের বিপক্ষে হলেও বিশ্বকাপে দুটি জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ।
নেদারল্যান্ড এবং জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেই দুটি জয় পেতে অবশ্য বেশ কাঠখর পোড়াতে হয়েছিল ক্রিকেটারদের। এছাড়াও ভারতের বিপক্ষে বেশ লড়াই করেছিল বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত মাত্র পাঁচ রানের আক্ষেপে পুড়তে হয় দেশবাসীর। ম্যাচে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত টাইগারদের বিপক্ষে যায়। ভারতের পক্ষে আইসিসির এই পক্ষপাতমূলক আচরণ অবশ্য নতুন কিছু নয়। ম্যাচের একটি দুটি সিদ্ধান্তও টাইগারদের পক্ষে গেলেই অসাধারণ এক বিশ্বকাপ কাটিয়েছে টাইগাররা এমনটি বলা যেত।
পরবর্তীতে দেশের মাটিতে সেই ভারতের বিপক্ষে সিরিজ দিয়েই বছর শেষ করে টাইগাররা। ওয়ানডেতে প্রত্যাশিতভাবেই দুর্দান্ত এক বাংলাদেশেরই দেখা মিলেছে। ভারতকে ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে হারায় টাইগাররা। টেস্ট সিরিজে ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হলেও মিরপুরে শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করেছিল টিম টাইগার্স। সব মিলিয়ে ২০২২ সালটি টাইগারদের জন্য ছিল মিশ্র অনুভূতির এক বছর।
এই বছরে টেস্টের সাফল্যও এসেছে এবং দুর্বলতাগুলোও চোখে পড়েছে। এই বছরে শুধু দেশের মাটিতেই নয় বিদেশেও ভালো করেছে টাইগাররা বিশেষ করে ওয়ানডেতে। ওয়ানডেতে বাংলাদেশ কতটা শক্তিশালী দল তা এই বছর আরো ভালোভাবে পরিষ্কার হলো। অন্যান্য সংস্করণে দলের অবস্থা যতই খারাপ থাকুক না কেন ওয়ানডে ক্রিকেটে টাইগাররা সবসময় সমীহ জাগানিয়া দল।
বছরের শেষ দিকে টি-টোয়েন্টিতেও ভালো পারফর্ম করেছে টাইগাররা। ফলে টি-টোয়েন্টিতে একটি উন্নতির ধারা লক্ষ করা গিয়েছে। এছাড়া বছরের শেষে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ জেতার সুখ স্মৃতি রয়েছে। তাহলে বলাই যায় বছরটি মোটামুটি ভালোই গিয়েছে টাইগারদের কারণ শেষ ভালো যার সব ভালো তার।
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- বাংলাদেশ সীমান্তে বিমান হা'ম'লা'য় নি'হ'ত ৪০
- কমে গেল বাড়ল সিঙ্গাপুর ডলারের রেট ; ৮ জানুয়ারি ২০২৫
- বাংলাদেশ সীমান্তে সং'ঘ'র্ষ: নি*হত ১৮ জন
- হু হু করে কমে গেল সৌদি রিয়ালের দাম, দেখে নিন আজকের দাম
- আজও বাড়ল সৌদি রিয়ালের দাম, দেখে নিন আজকের দাম
- ব্রেকিং নিউজ : অবস্থা খুব খারাপ ‘কমপ্লিট শাটডাউন’
- বাড়ল সৌদি রিয়ালের দাম, দেখে নিন আজকের দাম
- বাড়ল সিঙ্গাপুর ডলারের রেট; ১৩ জানুয়ারি ২০২৫
- বাড়ল সৌদি রিয়ালের দাম, দেখে নিন আজকের দাম
- আজও বাড়ল সৌদি রিয়ালের দাম, দেখে নিন আজকের দাম
- বাড়ল মালয়েশিয়ান রিংগিতের দাম, দেখে নিন আজকের দাম
- ৩ পয়সা বাড়ল মালয়েশিয়ান রিংগিতের দাম, দেখে নিন আজকের দাম
- বাড়ল সিঙ্গাপুর ডলারের রেট, দেখে নিন আজকের দাম
- কমে গেল সৌদি রিয়ালের দাম, দেখে নিন আজকের দাম
- চরম দু:সংবাদ, ভিসা বন্ধ করল