বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর; অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর। কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত এই পংক্তি দেখা যায় বাস্তব জীবনেও। এইতো কয়দিন আগেও বিরাট কোহলি জানিয়েছিলেন, তার ক্যারিয়ার এবং সাফল্যে কতটা ভূমিকা স্ত্রী আনুশকা শর্মার। সাকিব আল হাসানও একাধিকবার স্বীকার করেছেন স্ত্রী শিশিরের অবদানের কথা।

তবে বিপরীত চিত্রও আছে। কোহলি-সাকিবদের নানা সময়ে স্ত্রীদের কারণে বিব্রতও হতে হয়। বাংলাদেশের ক্রিকেটে যদি এমন ক্রিকেটারের তালিকা করা হয়, তাহলে সাকিব ছাড়াও স্ত্রীর হাতিয়ারে সওয়ার পাওয়া ক্রিকেটার হিসেবে উঠে আসবে লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নাম।

সাকিব আল হাসানকে নিয়ে যেমন হাজার হাজার ইতিবাচক খবর আছে, তেমনি আছে কিছু নেতিবাচক খবরও। নানা সময়ে বিতর্কের জন্ম দিয়ে সাকিব কুড়িয়েছেন অনেক সমালোচনা, পড়েছেন বোর্ডের রোষানলে। আর এসব ক্ষেত্রে বরাবরই তিনি পাশে পেয়েছেন স্ত্রী উম্মে আহমেদ শিশিরকে। কখনো অন্য ক্রিকেটারদের খোঁচা, কখনও বোর্ডকে খোঁচা আবার কখনো সাকিবের প্রশংসায় মেতে ওঠে প্রায়ই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিতে দেখা যায় সাকিব-পত্নীকে।

এই তালিকায় আছেন লিটন দাসের স্ত্রী সঞ্চিতার নামও। গত টি-২০ বিশ্বকাপে লিটনের পারফরম্যান্স নিয়ে তুমুল ট্রল আর রসিকতা হচ্ছিল। কোনো কোনো ব্যবসায়ী লিটনের রানের সমান মূল্যছাড়ের অফার দিয়েছিলেন। আর তা দেখে রেগে আগুন হওয়ার দশা সঞ্চিতার। লিটন অবশ্য সঞ্চিতার মান রেখেছেন। বীরদর্পে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন বিশ্ব ক্রিকেটে, তিন ফরম্যাটেই।

কিছুদিন আগে এই তালিকায় যোগ হয় মুশফিকুর রহিমের স্ত্রী জান্নাতুল কিফায়াত মণ্ডির নাম। টি-টোয়েন্টি ভালো করতে পারছিলেন না মুশফিক, তবে বাকি দুই ফরম্যাটে তিনি বরাবরই সেরাদের একজন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গত মে মাসে মুশফিক সেঞ্চুরি করেন, পা রাখেন ৫ হাজার রানের মাইলফলকে। বোর্ডের প্রতি খোঁচা দিয়ে তখন মণ্ডি লিখেছিলেন, ‘আমরা হাসিমুখেই বিদায় নেবো ইনশাআল্লাহ। তবে আপনাদের রিপ্লেসমেন্ট আছে তো? সেদিকেও একটু নজর দিলে বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নয়ন হতো!’

মণ্ডির সেই খোঁচাখুঁচি এখানে থেমে থাকেনি। তার আগে বলে নেওয়া যাক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের স্ত্রী ও মণ্ডির আপন বড় বোন জান্নাতুল কাওসার মিষ্টির কথা। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জায়গা না পাওয়ায় মণ্ডি পোস্ট করেন, ‘এই দেশে যোগ্য লোকের যোগ্যতার মূল‍্যায়ন হয় না, হবেও না।’ তার সেই পোস্টে মন্তব্য করেন ছোট বোন ও মুশফিকের স্ত্রী মণ্ডি। তিনি লিখেছেন, ‘আরে নাহ, তাদের দলে অনেক হার্ডহিটার আছে। বলে বলে ছয় আর ছয়।’

মণ্ডির এই মন্তব্যের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্রিকেটারদের স্ত্রীদের কার্যক্রম নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। যদিও বিতর্কের আগুনে ঘি ঢেলে মুশফিক-পত্নী তার ফেসবুক একাউন্ট ডিএকটিভেট করে রেখেছেন!