ব্রেকিং নিউজ: মাথা খাটালে বিপদ, ফুটবলে হেড দেওয়া নিষিদ্ধের সম্ভবনা

হঠাৎ ‘হেড’ করা নিয়ে কেন এত চিন্তা?
বিষয় অনেক। প্রথমত, স্বাস্থ্য। খেলা ও প্রশিক্ষণে ক্রমাগত মানসিক চাপের কারণে এক শ্রেণীর ফুটবলারদের স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে। ফুটবলারদের মধ্যে 'ডিমেনশিয়া' বা অ্যামনেসিয়ার মতো রোগ বাড়ছে। দ্বিতীয়ত, দুর্ঘটনা। দ্রুত গতির ফুটবলের আধুনিক বিশ্বে কোনো দলই বাদ পড়ে না। দুর্ঘটনা ও হেডিং প্রায়ই ঘটছে। পরবর্তী সময়ে, খেলোয়াড়দের শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর সামগ্রিক প্রভাব পরিলক্ষিত হয়।
ফুটবল আইন প্রণয়নকারী ‘আইএফএবি’ ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে সক্রিয়। ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ‘আইএফএবি’ এর কাছে ১২ বছরের কম বয়সী ফুটবলারদের ম্যাচ বা প্রশিক্ষণে দায়িত্ব পালন না করার অনুমতি চেয়েছে। এই মুহূর্তে বিষয়টি পরীক্ষামূলকভাবে দেখা হচ্ছে। বিচার সফল হলে দুই বছরের মধ্যে অনূর্ধ্ব-১২ ফুটবলারদের পদোন্নতি থেকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ!
আইএফএবি জানিয়েছে, রাতারাতি হেড করা তুলে দেওয়ার চেষ্টা তারা করছে না। চেষ্টা হচ্ছে, খুদে ফুটবলাররা যাতে হেড করতে গিয়ে অবাঞ্ছিত কোনও দুর্ঘটনার মধ্যে না পড়ে। বয়স বাড়লে ধীরে ধীরে তাদের হেড করার অনুমতি দেওয়া হবে। ২০২০ সালে এফএ তাদের নির্দেশিকায় স্পষ্ট জানিয়েছে, পেশাদার ফুটবলাররা অনুশীলনের সময় সপ্তাহে ১০টির বেশি হেড করতে পারবেন না।
হেড করা এবং ‘ক্রনিক ট্রমাটিক এনসেফালোপ্যাথি’ (সিটিই) আর ডিমেনশিয়ার মধ্যে কোনও সম্পর্ক আছে কি না, তা নিয়ে এফএ ইতিমধ্যেই গবেষণা শুরু করেছে। অতীত পরিসংখ্যান থেকে এটা স্পষ্ট যে, হেডিংয়ের সঙ্গে স্নায়ুরোগের সম্পর্ক পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ২০০২ সালে স্নায়ুর রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ফুটবলার জেফ অ্যাশলে। মৃত্যুর পর জানা যায়, তিনি সিটিই-তে ভুগছিলেন।
১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপজয়ী দলের মধ্যে অন্তত ছ’জনের ডিমেনশিয়া হয়। তাঁদের মধ্যে ববি চার্লটন এখনও জীবিত। ২০১৯ সালে একটি গবেষণায় দেখা যায়, গোলরক্ষক ছাড়া অন্য পজিশনের ফুটবলারদের স্নায়ুর রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সাধারণ মানুষের থেকে অন্তত সাড়ে তিন গুণ বেশি। দু’বছর পর, অর্থাৎ ২০২১ সালে আরও একটি গবেষণায় দেখা যায়, জীবনের মধ্যভাগে বা তারও আগে-পরে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ডিফেন্ডারদের মধ্যে অনেক বেশি। প্রসঙ্গত, ডিফেন্সে খেলতে গেলে হেড করে বল বিপদসীমার বাইরে করাটা চালু প্রক্রিয়া। রোজ আরও বহু গবেষণা হচ্ছে। গবেষকরা মনে করছেন, সে সব গবেষণা থেকে আরও গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল বেরিয়ে আসতে পারে।
আধুনিক ফুটবলে প্রথম সারির দলগুলি এখন চেষ্টা করে আক্রমণের সময় বল ‘ক্রস’ না করার। দুই উইং থেকে ভেতরে ঢুকে এসে সরাসরি গোলে শট নেওয়ার অভ্যাস বাড়ছে। অনেক দল কাউন্টার অ্যাটাকে গোল করার দিকেও ঝুঁকেছে। সেখানে মাঠের দু’প্রান্ত থেকে গোলের সামনে বল ভাসিয়ে দেওয়ার ঘটনাও কমছে। দর্শকদের মধ্যেও সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, তাঁরা এই ধরনের ফুটবল দেখতে বেশি পছন্দ করেন। ফলে ফুটবল মানেই এখন আর ‘গগনে গগনে’ খেলা নয়। আধুনিক কোচেদের মতে, সেখানে বিপদ বেশি। বরং মাটিতে বল রেখে মুন্সিয়ানা যে দল বেশি দেখাতে পারবে, তাদেরই সুবিধা বেশি। মিষ্টি রাখলে মাছি তো ভনভন করবেই। তাই প্লেট থেকে মিষ্টিই সরিয়ে দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন, কর্নার বা ফ্রিকিক আটকানোর ক্ষেত্রে তা হলে ডিফেন্ডাররা কী করবেন? তারও পরিসংখ্যান রয়েছে। আধুনিক ফুটবলে এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ‘শর্ট কর্নার’। আগে ফুটবলাররা বক্সের মধ্যে বল ভাসিয়ে দিতেন, যাতে তাঁর দলের কোনও না কোনও ফুটবলার হেড করে গোল করতে পারতেন। সেই পদ্ধতিও প্রায় ১০ শতাংশ কমেছে। এখন কর্নারের সময় সামনে থাকা কোনও ফুটবলারকে পাস দিয়ে ছোট ছোট আক্রমণে গোল করার প্রবণতা বাড়ছে।
আরও একটি জিনিস আধুনিক ফুটবলে দেখা যাচ্ছে। দূর থেকে বলে শট না মারা। সৌন্দর্যই হোক বা পরিকল্পনা, আধুনিক কোচেরা ফুটবলারদের দূর থেকে শট নিতে বারণ করছেন। তাঁরা তখনই শট নিতে বলছেন, যখন সেই ফুটবলার গোল করার ব্যাপারে প্রায় নিশ্চিত। একই ভাবে, বক্সের বাইরে থেকে হেডে গোল করার ঝোঁকও কমেছে।
আধুনিক ফুটবলে প্রথম সারির দলগুলি এখন চেষ্টা করে আক্রমণের সময় বল ‘ক্রস’ না করার। দুই উইং থেকে ভেতরে ঢুকে এসে সরাসরি গোলে শট নেওয়ার অভ্যাস বাড়ছে। অনেক দল কাউন্টার অ্যাটাকে গোল করার দিকেও ঝুঁকেছে। সেখানে মাঠের দু’প্রান্ত থেকে গোলের সামনে বল ভাসিয়ে দেওয়ার ঘটনাও কমছে। দর্শকদের মধ্যেও সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, তাঁরা এই ধরনের ফুটবল দেখতে বেশি পছন্দ করেন। ফলে ফুটবল মানেই এখন আর ‘গগনে গগনে’ খেলা নয়। আধুনিক কোচেদের মতে, সেখানে বিপদ বেশি। বরং মাটিতে বল রেখে মুন্সিয়ানা যে দল বেশি দেখাতে পারবে, তাদেরই সুবিধা বেশি। মিষ্টি রাখলে মাছি তো ভনভন করবেই। তাই প্লেট থেকে মিষ্টিই সরিয়ে দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন, কর্নার বা ফ্রিকিক আটকানোর ক্ষেত্রে তা হলে ডিফেন্ডাররা কী করবেন? তারও পরিসংখ্যান রয়েছে। আধুনিক ফুটবলে এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ‘শর্ট কর্নার’। আগে ফুটবলাররা বক্সের মধ্যে বল ভাসিয়ে দিতেন, যাতে তাঁর দলের কোনও না কোনও ফুটবলার হেড করে গোল করতে পারতেন। সেই পদ্ধতিও প্রায় ১০ শতাংশ কমেছে। এখন কর্নারের সময় সামনে-থাকা কোনও ফুটবলারকে পাস দিয়ে ছোট ছোট আক্রমণে গোল করার প্রবণতা বাড়ছে।
আরও একটি জিনিস আধুনিক ফুটবলে দেখা যাচ্ছে। দূর থেকে বলে শট না মারা। সৌন্দর্যই হোক বা পরিকল্পনা, আধুনিক কোচেরা ফুটবলারদের দূর থেকে শট নিতে বারণ করছেন। তাঁরা তখনই শট নিতে বলছেন, যখন সেই ফুটবলার গোল করার ব্যাপারে প্রায় নিশ্চিত। একই ভাবে, বক্সের বাইরে থেকে হেডে গোল করার ঝোঁকও কমেছে।
স্বাস্থ্যই হোক বা পরিকল্পনা— ভারতের কোচ-ফুটবলাররা অবশ্য হেড তুলে দেওয়ার পক্ষপাতী নন। প্রাক্তন ফুটবলার সুব্রত ভট্টাচার্য আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, ‘‘মোহনবাগানের হয়ে আমি ৬৭টা গোল করেছি। তার মধ্যে ৩৫টা হেডে। এ ছাড়া, প্রতি বার অনুশীলন করতে নামার সময় অন্তত ৩৫-৪০টা হেড করতাম। কোথাও কোনও দিন সমস্যা হয়নি। আমার মতে, মাথার সঠিক জায়গা দিয়ে হেড করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
সেই সময় ঘাড়ের পেশি কোন জায়গায় রয়েছে, তার উপরে অনেক কিছু নির্ভর করে।’’ সুব্রতের আরও নিদান, ‘‘কপালের মাঝখান দিয়ে হেড করাই ভাল। তাতে হেড যেমন শক্তিশালী হয়, তেমন বিপদের সম্ভাবনাও কম থাকে। এমনিতে হেড করতে গিয়ে বিপক্ষ খেলোয়াড়ের মাথার সঙ্গে ঠোকাঠুকি লাগতে পারে। তাতে বিপদ হলেও হতে পারে। আমার এক বার হেড করার পর মাটিতে মাথা ঠুকে গিয়ে চোট লেগেছিল। এ ছাড়া কোনও দিন বড় চোট লাগেনি।’’
ফুটবলের প্রয়োজনে হেড থাকা উচিত জানিয়ে সুব্রত বলছেন, ‘‘হেড ফুটবল খেলার একটা অংশ। এর মধ্যে একটা সৌন্দর্য্য রয়েছে। সেটা কমে গেলে আখেরে ক্ষতি হবে ফুটবলেরই। আলাদা করে এতে ভারতীয়দের সুবিধা হবে বলে মনে হয় না। কারণ, খেলাটা পায়ের পাশাপাশি মাথা দিয়েও হয়। গোলকিক মারার পর বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হেড করেই তা ক্লিয়ার করতে হয়। যারা ভাবছে হেড কমলে সুবিধা হবে, তারা ভুল ভাবছে।’’
ভারতীয় ফুটবলে হেড করে গোল করা বা ডিফেন্ড করার জন্য এক সময় বিখ্যাত ছিলেন শিশির ঘোষ। খাটো চেহারা হলেও বিপক্ষ ফুটবলারদের নড়তে দিতেন না। প্রাক্তন এই স্ট্রাইকার আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, “কার কী রোগ হবে, সেটা ভেবে তো হেড করা বন্ধ করে দেওয়া যায় না। হেড না করেও তো ডিমেনশিয়া বা স্নায়ুর রোগ হতে পারে।”
হেড করা কমে গেলে ভারতের কোনও সুবিধা হবে বলে মানতে নারাজ মেহতাব। তিনি বলছেন, “সুনীল ছেত্রী অনেক গোল হেডে করেছে। আমরা হংকং বা উজবেকিস্তানের বিরুদ্ধে জিততে পারি। কিন্তু জাপান, কোরিয়ার মতো উন্নত দেশগুলির বিরুদ্ধে খেলতে গেলে শুধু পাসিং ফুটবলের উপর নির্ভর করলে চলবে না। সেখানে সেন্টার করা এবং হেড করা খুবই জরুরি।” একই কথা প্রাক্তন ফুটবলার গৌতম সরকারেরও, “আমি নিজে ছোটখাটো চেহারার। ভাল হেড কোনও দিনই করতে পারতাম না। তা বলে হেড করতে ভয় পাইনি কোনও দিন। হেডে জিততে পারব না, এমন পরিস্থিতি এলে অন্য ভাবে বিপক্ষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করতাম। সুধীর কর্মকারও তো ছোটখাটো চেহারার ছিল না। মনে করে দেখুন, ও বিপক্ষকে নড়তে দিত না।”
পিকে বন্দ্যোপাধ্যায় এক বার আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘‘ডান দিকে ছ’ফুট চার ইঞ্চি, বাঁ দিকে ছ’ফুট চার ইঞ্চি। মাঝে এক জন পাঁচ ফুট চার ভাইচুং ভুটিয়া। চচ্চড়ির মশলা দিয়ে তো আর বিরিয়ানি রাঁধা যায় না!’’
দিয়েগো মারাদোনা বিশ্বকাপে হেডের বদলে হাত দিয়ে গোল করেছিলেন। বলে হাত দিলে ‘ফাউল’ হয়। বলে মাথা দিলে যদি ফাউল হয়, তা হলে আগামী দিনের মারাদোনাদের চুরি করার জন্য অন্য ফন্দি বার করতে হবে!
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- আল আউটের পর বোলিংয়ে বাংলাদেশ, দেখেনিন সর্বশেষ স্কোর
- ২০ ওভার শেষে দেখে নিন বাংলাদেশের সর্বষেশ স্কোর
- পাকিস্তান শিবিরে আঘাত হানলেন সাকিব, ২০ ওভার শেষ দেখে নিন স্কোর
- বেড়িয়ে এলো অভিনেতা শাহবাজ সানীর মৃত্যুর আসল কারণ
- বাড়ল সিঙ্গাপুর ডলারের রেট
- বাড়ল মালয়েশিয়ান রিংগিতের দাম
- একটু পরে মাঠে নামবে বাংলাদেশ-পাকিস্তান, সরাসরি যেভাবে দেখবেন
- বোলিংয়ে প্রথম ১০ ওভারে জ্বলে উঠলো বাংলাদেশ, দেখে নিন সর্বশেষ স্কোর
- আজ ২০ ফেব্রুয়ারি, দেখেনিন আজকের সকল দেশের টাকার রেট
- কমে গেল সৌদি রিয়ালের দাম
- দেশে ফের বাড়ল সৌদি রিয়ালের বিনিময় হার
- আজ ১৯ ফেব্রুয়ারি, দেখেনিন আজকের সকল দেশের টাকার রেট
- আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি, দেখেনিন আজকের সকল দেশের টাকার রেট
- পাকিস্তানের বিপক্ষে টস জিতল বাংলাদেশ, দেখে নিন একাদশ
- ৩৮ ওভারে আল আউট বাংলাদেশ, দেখেনিন সর্বশেষ স্কোর